Asim Deb Writings

গীতিনাট্য দেব কনা

গীতিনাট্য দেব কনা

অসীম দেব

দানেশরাজ্যের যুবরাজ কুমার দেবদত্ত চলেছে বল্লভগড় দুর্গরাজ্য অভিমুখে। বিশ্বস্ত মিত্র তিলক খবর এনেছে, বল্লভগড়ের রাজকন্যা ইলাকণা সৌন্দর্য্যে অপরূপা, সুগঠনা, ও জ্ঞান, বিদ্যায়, সাহিত্য, নৃত্য, গীতে অনন্যা। দেবদত্তর শপথ, প্রেমে রাজকন্যার মন জয় করতে না পারলে যুদ্ধ করেই সে হরণ করবে তাঁর রাজকন্যাকে। তাই সৈন্য ও উপঢৌকন, এই দুই নিয়ে চলেছে বল্লভগড় দুর্গরাজ্য অভিযানে।

রাজকুমার আসীন তাঁর পোষ্য সিংহপৃষ্ঠে, আর অশ্বপৃষ্ঠে চলেছে তাঁর একান্ত মিত্র, মন্ত্রণাদাতা, যুব সেনাপতি ও শাস্ত্রীয় সংগীতে অগাধ পান্ডিত্যের অধিকারী কুমার তিলক। কুমার দেবদত্ত জ্ঞানী, তথা সুদর্শন, সুপুরুষ, যুদ্ধে অজেয়, মৃগয়ায় অব্যার্থ তীরন্দাজ, বন্য সিংহ তাঁর ক্রীড়াসঙ্গী, ভ্রমণসঙ্গী। সকল নারীরই সে আকাঙ্ক্ষিত প্রেমিক, হৃদয়হরণে অপ্রতিন্দ্বন্দী। এবং সুকন্ঠের অধিকারী, যার গানে শাস্ত্রের নিয়মের বাঁধন নাই, তাঁর মনোহরণ সুরে বনের পাখীদের কাকলীও স্তব্ধ হয়ে যায়।

দুর্গের পুষ্পরাজির আঙিনায় সেদিনের সন্ধ্যার কোমল বাতাসের স্নিগ্ধ চাঁদিনী আলোয় সখী পরিবৃতা হয়ে রাজকন্যা ইলাকণা গাইছে –

সখী, ভাবনা কাহারে বলে। সখী, যাতনা কাহারে বলে।
তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ‘ভালোবাসা’ ‘ভালোবাসা’
সখী, ভালোবাসা কারে কয়!
সে কি কেবলই যাতনাময়?
সে কি কেবলই চোখের জল?
সে কি কেবলই দুখের শ্বাস?
লোকে তবে করে কী সুখেরই তরে এমন দুখের আশ।
তারা কেবলই হাসে, কেবলই গায়, হাসিয়া খেলিয়া মরিতে চায়
না জানে বেদন, না জানে রোদন, না জানে সাধের যাতনা যত।
আমার মতন সুখী কে আছে।
আয় সখী, আয় আমার কাছে
সুখী হৃদয়ের সুখের গান শুনিয়া তোদের জুড়াবে প্রাণ।
প্রতিদিন যদি কাঁদিবি কেবল
একদিন নয় হাসিবি তোরা
একদিন নয় বিষাদ ভুলিয়া সকলে মিলিয়া গাহিব মোরা।
সখী, ভাবনা কাহারে বলে?

রাজকন্যার মনোভাব বুঝে তাঁর মনোরঞ্জনে ভাস্বতী, শর্মিষ্ঠা, সুতপা, অঞ্জলি প্রমুখ সখীরা আনন্দে কলহাস্যে গাইলো

বাজিবে, সখী, বাঁশি বাজিবে
হৃদয়রাজ হৃদে রাজিবে॥
বচন রাশি রাশি কোথা যে যাবে ভাসি,
অধরে লাজহাসি সাজিবে॥
নয়নে আঁখিজল করিবে ছলছল,
সুখবেদনা মনে বাজিবে।
মরমে মুরছিয়া মিলাতে চাবে হিয়া
সেই চরণযুগরাজীবে॥
বাজিবে, সখী, বাঁশি বাজিবে

ইলাকণা উদাস, সখীদের ডেকে চুপি চুপি বলে,সখী, আয় না তোরা, আমরা সকলে মিলে এইক্ষণে কিছু গল্প করি। সখীরা বলে, শুধুই গল্পকথা? না রে। তার চেয়ে আয় আমরা আজ জোছনার রাতে ঐ দূরের চাঁদকে সাক্ষী রেখে নাচের তালে আমাদের মনের কথাগুলি বলি।

এই মোম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে গল্প করি
দেখ ঐ ঝিলিমিলি চাঁদ সারারাত আকাশে সলমা জরি
জাফরানি ঐ আলতা ঠোঁটে মিষ্টি হাসির গোলাপ ফোটে
মনে হয় বাতাসের ঐ দিলরুবাতে সুর মিলিয়ে আলাপ ধরি
এই রূপসী রাত আর ঐ রুপালী চাঁদ
বলে জেগে থাকো এ লগন আর কখনও ফিরে পাবে নাকো
মখমলের ঐ সুজনি খাসে বসলি না হয় একটু পাশে
মনে হয় মহুয়ারি আতর মেখে সখার কোলে ঘুমিয়ে পড়ি।

নিশীথের বিজনে দুর্গের বাইরে শৈলপদমূলে রমনীয় বনমাঝে নিঃসঙ্গ একেলা কুমার দেবদত্তর বাঁশিতে তখন ছিল তাঁর হৃদয়ের অব্যাক্ত কামনা ও বেদনার সুর,

বাঁশি কেন হায়, আমারে কাঁদায়, কি গেছে হারায়,
স্মরণের বেদনায়,
কেন মনে এনে দেয় হায়।
কখনও আনন্দ ছিল জীবনেরও ছন্দে,
হৃদয়ও মাতাল হতো ফাগুনের গন্ধে।
সে গেল কোথায়?
আমি বা কোথায়?

ইলাকণা বলে, শোন রে সখী, আজ আমি আমার ব্যাকুল হৃদয়ের কথা বলি। দে আমার সেই কাগজ ও তুলির কলম। মন চাইছে মনের কথাগুলি এখনই কবিতায় লিখি। চাঁদিনীস্নাত আলোয় রাজকন্যা কবিতা লিখে সেই কবিতার কাগজখানি হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলে সেই কাগজটি উড়ে এসে পড়লো কুমার দেবদত্তের হাতে। কুমারের একাগ্র সাধনায় ব্যাঘাত ঘটলো। দেখে মনে হয় একটি চিঠি, কিন্তু সে হরিয়ানভী জাঠ, বাংলা অক্ষরে সে পরিচিত নয়। ভাবে, এটি নিশ্চয়ই কোন বাঙালী কন্যার। সঙ্গী তিলককে ডেকে বলে, মিত্র, এটা একটু পড়ে দাও। তিলক অজানা প্রেরকের কবিতা পড়ে শোনালো –

তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার
কানে কানে শুধু একবার বলো
তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার
আমারই পরাণে আসি, তুমি যে বাজাবে বাঁশি
সেই তো আমারই সাধনা, চাইনা তো কিছু আর
তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার
তুমি যে আমার দিশা, অকূল অন্ধকারে
দাও গো আমারে ভরে, নীরব অহংকারে
জীবন মরণ মাঝে, এসো গো বধুর সাজে
সেই তো আমারই জীবনে, তোমারই অভিসার
তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার

চিঠির মর্মবাণী শুনে অপরূপ পুলকে চঞ্চল হয়ে উঠলো কুমার দেবদত্ত। যেন বহুদিনের ব্যাথিত হৃদয়ের সুপ্ত স্বপ্নের না পাওয়া অধরা আজ ধরা দিতে চায়। আর সেই ক্ষণেই রাজকন্যা ইলাকণা দুর্গ প্রাসাদের নিজ কক্ষে প্রদীপ জ্বালিয়ে গবাক্ষে হতে নীলাকাশের খন্ডচাঁদ ও নক্ষত্ররাজির পানে চেয়ে সকরুণ বেদনার আবেগে উদাস কন্ঠে গাইলো

লজ্জা! মরি মরি একী লজ্জা!
ওগো তুমি না এলে যে কাটাতে ঘরে গো
আমার এ ফুলের শয্যা।
লজ্জা! মরি মরি একী লজ্জা!
মরে যাই একি লজ্জা!
মায়াকাজলে নয়ন সাজায়ে চাঁদিনী রাতে দেখি আঁধার,
মনেরই ছায়ায় কত কি যে গড়ি, মনে মনেই আমি ভাঙি আবার।
কাকে বোঝাবো, কিসে মেটাবো তোমাতে পেয়েছে মন যা।
আমাকে দেখে সকলে বলে, মানিনী ওরে, হলো কি তোর
নীরবে আমি দেখি যে আকাশ, এ নিশি কবে হবে গো ভোর,
কাকে বোঝাবো, কিসে মেটাবো তোমাতে পেয়েছে মন যা।

দূর অরন্য হতে কুমার দেখে দুর্গের বাতায়নে প্রদীপের স্তিমিত ম্লান আলোয় অগ্নিশিখার ন্যায় এক অপরূপ মুখশ্রী। এ কোন মায়াময়ী? এই কি আমার বেদনাবাসনাময়ী মজ্জমানা কামনাসুন্দরী অপরিচিতা রাজকন্যা ইলাকণা? বাঁশির সুরের মূর্ছনা গেলো থেমে। তাঁর মন হয়ে উঠলো উতলা, ধমনীতে শিহরণ। নীরব উচ্ছাস যেন কাব্যরূপে হৃদয়ে গুঞ্জরিত হলো

কেন দূরে থাকো? শুধু আড়াল রাখো
কে তুমি কে তুমি আমায় ডাকো?
মনে হয় তবু বারে বারে
এই বুঝি এলে মোর দ্বারে
সে মধুর স্বপ্ন ভেঙ্গো নাকো।
ভাবে মাধবী সুরভী তার বিলায়ে,
যাবে মধু ফের সুরে সুরে মিলায়ে।
তোমারি খেয়ালে ক্ষনে ক্ষনে,
কত কথা জাগে মোর মনে
চোখে মোর ফাগুনের ছবিটি আঁকো।
কেন দূরে থাকো, শুধু আড়াল রাখো
কে তুমি কে তুমি আমায় ডাকো?

পত্র পেয়ে কুমার দেবদত্ত অচেনা কন্যার উদ্দ্যেশ্যে গাইলো

আজি এসেছি–আজি এসেছি, এসেছি বঁধু হে,
নিয়ে এই হাসি, রূপ, গান।
আজি আমার যা কিছু আছে, এনেছি তোমার কাছে,
তোমায় করিতে সব দান।
আজি তোমার চরণতলে রাখি এ কুসুমহার,
এ হার তোমার গলে দিই বঁধু উপহার,
সুধার আধার ভরি, তোমার অধরে ধরি,
কর বঁধু কর তায় পান;
আজি হৃদয়ের সব আশা, সব সুখ, ভালোবাসা,
তোমাতে হউক অবসান।
ওই ভেসে আসে কুসুমিত উপবন-সৌরভ
ভেসে আসে উচ্ছল জলদল কলরব,
ভেসে আসে রাশি রাশি জ্যোৎস্নার মৃদু হাসি,
ভেসে আসে পাপিয়ার তান;
আজি, এমন চাঁদের আলো মরি যদি সেও ভালো,
সে- মরণ স্বর্গ সমান।
আজি তোমার চরণতলে লুটায়ে পড়িতে চাই,
তোমার জীবনতলে ডুবিয়া মরিতে চাই,
তোমার নয়নতলে শয়ন লভিব ব’লে,
আসিয়াছি তোমার নিধান;
আজি সব ভাষা সব বাক,
নীরব হইয়া যাক,
প্রাণে শুধু মিশে থাক– প্রাণ।

এরূপ অশ্রুতপূর্ব সুমধুর কন্ঠের সুরে শুধু রাজকন্যা ইলাকণা নয়, তাঁর সখীরাও মুগ্ধ। রাজকন্যাকে স্মিতহাস্য কটাক্ষ করে নূপুরের নিক্কনের তালে তাঁরা গাইলো

আধো আধো বোল্ লাজে-বাধো-বাধো বোল
ব’লো কানে কানে।
যে কথাটি আধো রাতে মনে লাগায় দোল
ব’লো কানে কানে।।
যে কথার কলি সখি আজও ফুটিল না, হায়
শরমে মরম-পাতে দোলে আন্‌মনা, হায়
যে কথাটি ঢেকে রাখে বুকের আঁচল
ব’লো কানে কানে।।
যে কথা লুকায়ে থাকে লাজ-নত চোখে
না বলিতে যে কথাটি জানাজানি লোকে।
যে কথাটি ধ’রে রাখে অধরের কোল
লুকিয়ে ব’লো নিরালায় থামিলে কলরোল।
যে কথাটি বলিতে চাও বেশভূষার ছলে
যে কথা দেয় ব’লে তব তনু পলে পলে
যে কথাটি বলিতে সই গালে পড়ে টোল্ —
ব’লো কানে কানে।।

কুমারের গানে ইলাকণা মোহিত। ভাবের সুরভীতে সখীদের বলা আধো আধো বোলে অজান্তেই তাঁর নিজ দেহে নর্তকীদের ছন্দের হিল্লোল সৃষ্টি করে। নৃত্যের তালে একেলাই সে গায়

তোমারি আঁখির মত আকাশের দুটি তারা
চেয়ে থাকে মোর প্রাণে নিশীথে তন্দ্রাহারা।
সে কি তুমি? সে কি তুমি?
ক্ষীণ আঁখি-দ্বীপ জ্বালি’ বাতায়নে জাগি একা
অসীম অন্ধকারে খুঁজি তব পথ-রেখা,
সহসা দখিন বায়ে চাঁপাবনে জাগে সাড়া
সে কি তুমি? সে কি তুমি?
তব স্মৃতি যদি ভুলি ক্ষণ-তরে আন্-কাজে
কেন যেন কাঁদিয়া উঠে আমার বুকের মাঝে ।
সে কি তুমি? সে কি তুমি?
বৈশাখী ঝরে রাতে চমকিয়া উঠি জেগে
বুঝি অশান্ত মম আসিলে ঝড়ের বেগে,
ঝর চ’লে যায় কেঁদে ঢালিয়া শ্রাবণ ধারা ।
সে কি তুমি? সে কি তুমি?

অন্য প্রান্তে কুমার দেবদত্তের চতুস্পাশের গহন রাতের জনশুন্য বনানীতে যেন ফাগুনের দোল, মৃদুমন্দ মর্মরধ্বনির নহবতে যেন বসন্তের আহ্বান

রঙে রঙে রঙিল আকাশ,
গানে গানে নিখিল উদাস।
যেন চল-চঞ্চল নব পল্লব দল,
মর্মরে মোর মনে মনে।
ফাগুন লেগেছে বনে বনে,
ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে।
ডালে ডালে ফুলে ফলে পাতায় পাতায় রে,
আড়ালে আড়ালে কোণে কোণে।
ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে।

রাজকুমারের কন্ঠেও আজ সীমাহীন ভাবনা। বলে, এই বনে নয়, বনে নয়, এই ফাগুন লেগেছে মোর মনে, এই ফাগুনের রাতে আমার পাখি যে অন্য এক গান গায়

বনে নয় মনে মোর পাখি আজ গান গায়
এই ঝিরিঝিরি হাওয়া দোলা দিয়ে যায়।
গুনগুন গুনগুন ভ্রমরের ফাল্গুন
ডাকে মোরে আয় আয় আয়।
বনে নয় মনে মোর পাখি আজ গান গায়।
একি তবে রূপময় অপরুপ দিল ডাক
স্বপনের সমারোহে বেলা আজ কেটে যাক
সুর আর সুরভীতে উন্মনা মন যেন
তারই সারা পায়।
এই ঝিরিঝিরি হাওয়া দোলা দিয়ে যায়
গুনগুন গুনগুন ভ্রমরের ফাল্গুন
ডাকে মোরে আয় আয় আয়
বনে নয় মনে মোর পাখি আজ গান গায়।

অকস্মাৎ এক দমকা হাওয়ায় রাজকন্যার ওড়না গেলো উড়ে। রাজকন্যা অপ্রস্তুত, সেই ওড়না হাওয়ায় ভেসে উড়ে এসে পড়লো রাজকুমারের নয়নে। স্বপ্ন থেকে জেগে উঠে কুমার। প্রিয় মিত্রকে বলে, আমার দুর্ভাগ্য, আমি হরিয়ানভি, আমি বাংলা অক্ষর জানিনা। আমার হয়ে রাজকুমারীর তরে একটা বাংলা কবিতা লিখে দাও। তিলক লিখে দিলো

আমি দূর হতে তোমারেই দেখেছি
আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি
বাঁজে কিনকিনি রিনিঝিনি, তোমারে যে চিনি চিনি
মনে মনে কত ছবি একেঁছি।
ছিল ভাবে ভরা দুটি আঁখি চঞ্চল
তুমি বাতাসে উড়ালে ভীরু অঞ্চল।
ঐ রুপের মাধুরী মোর সঞ্চয়ে রেখেছি।
আমি দূর হতে তোমারেই দেখেছি
আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি।
কস্তুরি মৃগ তুমি যেন কস্তুরি মৃগ তুমি
আপণ গন্ধ ঢেলে এ হৃদয় ছুঁয়ে গেলে
সে মায়ায় আপনারে ঢেকেছি।
ঐ কপোলে দেখেছি লাল পদ্ম
যেন দল মেলে ফুঁটেছে সে সদ্য
আমি ভ্রমরের গুন্জনে তোমারেই ডেকেছি।
আমি দূর হতে তোমারেই দেখেছি
আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি।

বিশ্বস্ত গুপ্তচর মারফত গোপনে সেই চিঠি গিয়ে পৌঁছায় রাজকন্যার হাতে। আর গুপ্তচর মারফত উত্তর আসে

আমার পরান যাহা চায়, তুমি তাই, তুমি তাই গো।
তোমা ছাড়া আর এ জগতে মোর কেহ নাই, কিছু নাই গো।
তুমি সুখ যদি নাহি পাও,
যাও, সুখের সন্ধানে যাও,
আমি তোমারে পেয়েছি হৃদয়মাঝে,
আর কিছু নাহি চাই গো।
আমার পরান যাহা চায়
তুমি তাই, তুমি তাই গো।

উদাসীন দেবদত্তকে তাঁর মিত্র তিলক প্রশ্ন করে, এত নীরব কেন, কুমার? কুমার চেয়ে থাকে তিলকের মুখপানে,বলে

যদি কিছু আমারে শুধাও
কি যে তোমারে কব?
নীরবে চাহিয়া রব, না বলা কথা বুঝিয়া নাও
ওই আকাশ নত, যুগে যুগে সংযত
নীরবতায় অবিরত, কথা বলে গেছে কত
তেমনি আমার বানী, সৌরভে কানাকানি
হয় যদি ভ্রমরা গো,
সে ব্যাথা বুঝিয়া নাও
অন্তরে অন্তরে
যদি কোন মন্তরে বোবা এ প্রাণের ব্যাথা
বোঝানো যেত গো তারে
কবির কবিতা সবই
তুলি দিয়ে আঁকা ছবি
কিছু নাই তার কাছে, এটুকু বুঝিয়া নাও।
যদি কিছু আমারে শুধাও
কি যে তোমারে কব?
নীরবে চাহিয়া রব, না বলা কথা বুঝিয়া নাও

তিলক সংগীতের গভীর চর্চা করে। বলে, কুমার তুমি রাজকন্যার উদ্দেশ্যে রামকেলি রাগে একটি ত্রিতালের গান গাও। কুমার রাগরাগিনী জানে না, ত্রিতাল বোঝেনা। সে নিজের মতে গায়
– জানি না, কোথায় তুমি,
হারিয়ে গেছ, আর পাবো কিনা।
আমি তাই, খুঁজি তোমায়, কোথায়?
কুমারকে বিস্মিত করে আশাতীত ভাবে উত্তর আসে
– এখানে
কুমার এখন ভাবের ঘোরে। সে গাইলো
– বারে বারে আমি, জ্বেলেছি আশার বাতি,
নিভে গেছে কতো যে চাঁদ কেঁদে সারা রাতি
আমি তাই, খুঁজি তোমায়,
কোথায়?
উত্তর আসে
– এখানে
এই তো আমি আবার, এসেছি তোমার কাছে.
তোমারই সুর, তোমারই গান, আমায় ঘিরে আছে.
আমি তাই, খুঁজি তোমায়,
কোথায়?
দেবদত্ত গাইলো
– এখানে

ইলাকণা সখীদের বলে, এখন আমার কি ইচ্ছে করে জানিস সখীরা?

আজ দুজনে মন্দ হলে মন্দ কি?
দেখো, ময়ূরকন্ঠী রাত যে আলোয় ঝিলমিলিয়ে।
আহা এমন রাতে এসো না আজ ভাব করি।
আহা এই ফাগুনের বাহার তো কাল থাকবে না
ও ভ্রমর, তখন তুমি ফুলের খবর রাখবে না
যৌবনেরই রঙমশাল, জ্বলছে দেখো রঙ মাতাল।
সেই আগুনে, আজকে না হয় ঝাপ দিলে।
দেখো ময়ূরকন্ঠী রাত যে আলোয় ঝিলমিলিয়ে
আহা, এমন রাতে এসো না আজ ভাব করি।
যদি, তোমার চোখে আমার চোখের রঙ লাগে।
আর একটু ছোঁয়ায় রক্তে যদি ঢেউ জাগে।
দোহাই বলো দোষটা কি? মনকে কেন দাও ফাঁকি?
ও মৌমাছি, একটু না হয় আজকে তুমি মৌ নিলে।
দেখো, ময়ূরকন্ঠী রাত যে আলোয় ঝিলমিলিয়ে।
আহা এমন রাতে এসো না আজ ভাব করি।

ধীরে ধীরে পূবের আকাশে আসে প্রত্যুষের আলোর আভাস, যেন অপরূপ এক কবিতা নীরবে উচ্চারিত হয়

কি মিষ্টি, দেখো মিষ্টি, কি মিষ্টি এ সকাল।
সোনা ঝরছে, ঝরে পড়ছে, কি মিষ্টি এ সকাল।
নীল পাহাড়ের চূড়ায় চূড়ায় আলোর আভায় লাল হয়েছে
কি মিষ্টি এ সকাল।
সুরঝর্ণা মানা মানে না, ডানা মেলে যায় উড়ে ময়না।
মন পবনের দোলা লাগছে কি মিষ্টি এ সকাল।
আমি শুনছি, শুধু শুনছি কানে মোহনের বাঁশি শুনছি,
প্রেম যমুনার তীরে বসে বসে মিলনের দিন গুনছি।
মনভোমরা কেন গায় না মন যারে চায়, কেন পায় না
দূরে দুরন্ত মোরে ডাকছে
কি মিষ্টি এ সকাল।
সোনা ঝরছে, ঝরে পড়ছে, কি মিষ্টি এ সকাল।

প্রভাতের আলোয় সুরভিত অনুরাগের ছোঁয়া। তিলক বলে, কুমার, তুমি রাগ: ভৈরব, আর তাল: দাদরা গানটি গাও। দেবদত্ত সংগীতের রাগ রাগিনী বোঝে না। সে গায়,

আলোর অমল কমলখানি কে ফুটালে,
নীল আকাশের ঘুম ছুটালে।
আমার মনের ভাব্‌নাগুলি বাহির হল পাখা তুলি,
ওই কমলের পথে তাদের সেই জুটালে।
ফাগুনবাণীর বীণা বাজে কমলদলে।
ললিত রাগের সুর ঝরে তাই শিউলিতলে।
তাই তো বাতাস বেড়ায় মেতে কচি ধানের সবুজ ক্ষেতে,
বনের প্রাণে মর্‌মরানির ঢেউ উঠালে।
আলোর অমল কমলখানি কে ফুটালে।

দুর্গ মাঝে খুশীর নৃত্যগীতের আসরে সখীরা গায়

এই আকাশ নতুন, বাতাস নতুন, সবই তোমার জন্য
চোখের নতুন চাওয়া দিয়ে, করলে আমায় ধন্য।
যেদিকে তাকাই- মনে হয় তাই,
পুরনো এই পৃথিবীটা অনেক যেন অন্য।
চোখের নতুন চাওয়া দিয়ে করলে আমায় ধন্য।
ভাললাগার পরিধী আজ সীমানাহীন।
বহু রাত্রি- পেরিয়ে এল দিনের মত দিন।
সারাটি সময় শুধুই মনে হয়
সবার মাঝে ছড়ালো কে প্রাণেরই তারুণ্য।
চোখের নতুন চাওয়া দিয়ে, করলে আমায় ধন্য।

অকস্মাৎ দুর্গের সিংহ দুয়ার যায় খুলে। পুস্পমাল্য নিয়ে সম্মুখে এগিয়ে আসে অপরূপা এক রাজকন্যা। সদ্যবিকশিত আলস্যের সৌন্দর্য্যের যত্নে যেন সে লালিত। যৌবনপুষ্পিত দেহলতাটি সলজ্জ আবেগের মায়াজালে বন্দী। তাঁর দুটি নয়নের তীক্ষ্ণ ঝর্নাধারায় নীরব আবেদনের শব্দহীন অথচ গুঞ্জরিত মোহিনীমোহন রাগিনীর প্রতিচ্ছবি।
কুমার দেবদত্ত বাক্যহীন। অতীতের অনেক নারীর প্রেমে আকন্ঠ আপ্লূত রাজকুমার আজ যেন বিহবল। কি অপূর্ব রূপ এই ফাগুনের প্রভাতে? দেবদত্তের নির্বাক অবস্থায় রাজকন্যার সখীরা দেবদত্তর চতুর্দিক প্রদক্ষিণ করে গাইলো

प्यार किया तो डरना क्या?
जब प्यार किया तो डरना क्या?
प्यार किया, कोई चोरी नहीं की
प्यार किया…
प्यार किया, कोई चोरी नहीं की, छुप-छुप आहें भरना क्या?

आज कहेंगे दिल का फ़साना, जान भी ले-ले चाहे ज़माना
मौत वो ही जो दुनिया देखे, घुट-घुट कर यूँ मरना क्या?
जब प्यार किया तो डरना क्या?

उनकी तमन्ना दिल में रहेगी, शम्मा इसी महफ़िल में रहेगी
इश्क़ में जीना, इश्क़ में मरना, और हमें अब करना क्या?
जब प्यार किया तो डरना क्या?

छुप ना सकेगा इश्क़ हमारा, चारों तरफ़ है उनका नज़ारा
पर्दा नहीं जब कोई ख़ुदा से, बंदों से पर्दा करना क्या?
जब प्यार किया तो डरना क्या?

রাজকুমারী ইলাকণা দেখে সন্মুখে সিংহপৃষ্ঠে এক অপরূপ সুপুরুষ। তাঁরই পানে কমলনয়নে অপলক নেত্রে চেয়ে আছে। ইলাকণা প্রশ্ন করে,
– क्या देखते हो?
রাজকুমারের যেন ঘোর কেটে যায়, বলে
– सूरत तुम्हारी
– क्या चाहते हो?
– चाहत तुम्हारी
– न हम जो कह दें?
– कह न सकोगी
– लगती नहीं ठीक नीयत तुम्हारी
क्या देखते हो …
রাজকুমার মনে যেন বল পায়
– रोज़-रोज़ देखूँ तुझे नई-नई लगे मुझे
तेरे अँगों में अम्रित की धारा
স্মিতহাস্যে ইলাকণা সুমধুর স্বরে ও সুরে গেয়ে যায়
– मिलने लगे ढंग तेरे, देखे कोई रँग तेरे
तेरी बातों का अन्दाज़ प्यारा
– शरारत से चहरा चमकने लगा क्यों
– ये रँग लाई है संगत तुम्हारी
क्या देखते हो …
দুজনের কথোপকথন যেন শেষ হয় না
– सोचो ज़रा जान-ए-जिगर बीतेगी क्या तुमपे अगर
हमको जो कोई चुरा ले
तुमसे हमको जो कोई चुरा ले
– किसीने जो तुम्हें छीना, नामुम्किन है उसका जीना
कैसे नज़र कोई डाले
तुमपे कैसे नज़र कोई डाले
– प्यार पे अपने इतना भरोसा
– इतना मोहब्बत में फ़ित्रत हमारी

দেবদত্তের ইশারায় একটি কন্যা স্বর্ণপাত্রে উপঢৌকন নিয়ে আসে। সুগন্ধী অথচ তীব্র। পাত্র উন্মোচন করে রাজকন্যা দেখে আদার এক স্তুপ। রাজকুমার বলে, আমার রাজ্যের বিখ্যাত আদা। চার আনে মে সও গ্রাম, আঠ আনে পাও, বারা আনে আধা কিলো, আউর এক রুপিয়া মে কিলো’। আরও উপঢৌকন এনেছি রাজকন্যা তোমার জন্য, বাসমতি চাল সওয়া রুপিয়া সের, এক ডজন কলা সওয়া রুপিয়া। আমার রাজ্যের সাত সেক্টর থেকে এক নম্বরের বাজার যাওয়ার রিক্সা ভাড়া সওয়া রুপিয়া দিয়ে এগুলি সংগ্রহ করা।
ইলাকণা আদা বাসমতি চালের কিছুই বোঝে না। দেবদত্ত তাঁর প্রেয়সীর মনের কথা বোঝে। বলে, এখন নয়, তুমি যখন আমার রাজ্যে আসবে, তখন এই চন্ডালিকা মেয়েটি তোমার সহচরী হয়ে সব বুঝিয়ে দেবে।
ইলাকণা দেখে মেয়েটির বছর বারো-চোদ্দ বয়স। কাজল কালো রং, চুপচাপ মুখে টিপটিপে হাসি, বলে, আমার নাম বীরমতী।

সখীরা রাজকুমারকে দুর্গের অভ্যন্তরে আহ্বান করে

এসো আমার ঘরে।
বাহির হয়ে এসো তুমি যে আছ অন্তরে॥
স্বপনদুয়ার খুলে এসো অরুণ-আলোকে
মুগ্ধ এ চোখে।
ক্ষণকালের আভাস হতে চিরকালের তরে
এসো আমার ঘরে।
দুঃখসুখের দোলে এসো, প্রাণের হিল্লোলে এসো।
ছিলে আশার অরূপ বাণী ফাগুনবাতাসে
বনের আকুল নিশ্বাসে
এবার ফুলের প্রফুল্ল রূপ এসো বুকের ‘পরে।

সখীরা আবেদন করে, আজ এই সুমধুর ক্ষণে রাজকুমার ও রাজকুমারীকে একটি দ্বৈতসঙ্গীত গাইতে হবে। দুজনের প্রেমের উপাখ্যান নিয়ে এখন একটি গান হোক। সখীদের আবেদনে সারা দিয়ে পরস্পরের প্রতি এক পলক দেখে কুমার শুরু করে
आजकल तेरे मेरे प्यार के चर्चे हर ज़बान पर
सबको मालूम है और सबको खबर हो गई
ইলাকণা প্রশ্ন করে, सबको मालूम है? और सबको खबर हो गई?
সবাই কি আমাদের প্রেমকাহিনী জানে?
কুমার উত্তর দেয়
हमने तो प्यार में ऐसा काम कर लिया
प्यार की राह में अपना नाम कर लिया
प्यार की राह में अपना नाम कर लिया
आजकल तेरे मेरे प्यार के चर्चे हर ज़बान पर
এর পরেই শুরু হয় দুজনের গান

दो बदन एक दिन एक जान हो गए
मंज़िलें एक हुईं हमसफ़र बन गए
मंज़िलें एक हुईं हमसफ़र बन गए
आजकल तेरे मेरे प्यार के चर्चे हर ज़बान पर
क्यों भला हम डरें दिल के मालिक हैं हम
हर जनम में तुझे अपना माना सनम
हर जनम में तुझे अपना माना सनम
आजकल तेरे मेरे प्यार के चर्चे हर ज़बान पर

সখীরা রসিকতা করে রাজকুমারকে বলে, আমাদের রাজকন্যা কেমন? দেবদত্ত কবিতা বলে, হরিয়ানভি ও হিন্দি মিশ্রণে

बदन पे सितारे लपेटे हुए,
ओ जान-ए-तमन्ना किधर जा रही हो?
ज़रा पास आओ तो चैन आ जाए,
हमीं जब ना होंगे, तो ऐ दिलरुबा,
किसे देखकर, हाय, शरमाओगी
ना देखोगी फिर तुम कभी आइना,
हमारे बिना रोज़ घबराओगी

है बनने संवरने का जब ही मज़ा,
कोई देखने वाला आशिक़ तो हो
नहीं तो ये जलवे हैं बुझते दिये,
कोई मिटने वाला एक आशिक़ तो हो
बदन पे सितारे लपेटे हुए

দেবদত্ত রাজকন্যাকে আলিঙ্গন করে বলে

चुरा लिया है तुमने जो दिल को, नज़र नहीं चुराना सनम
बदलके मेरी तुम ज़िंदगानी, कहीं बदल न जाना सनम
ओह ले लिया दिल ओह हाये मेरा दिल
हाये दिल लेकर मुझको ना बहलाना
चुरा लिया है तुमने जो दिल को

बहार बनके आऊँ कभी, तुम्हारी दुनिया में
गुजर न जाए यह दिन, कहीं इसी तमन्ना में
तुम मेरे हो हो तुम मेरे हो
आज तुम इतना वादा करते जाना
चुरा लिया है तुमने जो दिल को

हो सजाऊंगा लूटकर भी तेरे बदन की डाली को
लहू जिगर का दूंगा हसीं लबों की लाली को
है वफ़ा क्या इस जहां को,
एक दिन दिखला दूँगा मैं दीवाना
चुरा लिया है तुमने जो दिल को, नज़र नहीं चुराना सनम

রাজকন্যা আবেশে বলে, রাজা, তুমি আমায় ভুলে যাবে না তো?
দেবদত্ত বলে, না না না, একি কথা? আমি তোমার মতন ভালো বাংলা বলতে পারি না, কিন্তু আমার মনের একটি কবিতা তোমাকে শোনাই

चाहूँगा मैं तुझे साँझ सवेरे
फिर भी कभी अब नाम को तेरे
आवाज़ मैं न दूँगा, आवाज़ मैं न दूँगा
देख मुझे सब है पता
सुनता है तू मन की सदा,
मितवा … मेरे यार तुझको बार बार
आवाज़ मैं न दूँगा, आवाज़ मैं न दूँगा
दर्द भी तू चैन भी तू
दरस भी तू नैन भी तू
मितवा … मेरे यार तुझको बार बार
आवाज़ मैं न दूँगा, आवाज़ मैं न दूँगा

দেবদত্ত বলে, রাজকন্যা, চলো আমার সাথে, চলো দুজনে এখনই যাত্রা করি আমার রাজ্যে। সিংহের পিঠে চড়ে আমার দুজনে চলো ফিরে যাই।
রাজকন্যা বলে, সিংহের পিঠে চড়ে?
– হ্যাঁ, সিংহ। কারণ আমার এক কুমারী সখী, নাম সুন্দরী অগ্নিকুন্ড। সে এসকর্টের মোটর বাইক নিয়ে চলে গেছে। ক্ষতি নেই, সিংহের পিঠেই দুজনে চড়বো। আর আমি গাইবো –
এ পথ যদি না শেষ হয়?
তবে কেমন হোতো তুমি বলো তো
যদি পৃথিবীটা স্বপ্নের দেশ হয়?
তবে কেমন হোতো তুমি বলো তো।
কোন রাখালের এই ঘর ছাড়া বাঁশীতে,
সবুজের ওই দোল দোল হাসিতে
মন আমার মিশে গেলে বেশ হয়।
নীল আকাশের ওই দূর সীমা ছাড়িয়ে,
এই গান যেন যায় হারিয়ে,
প্রাণে যদি এ গানের রেশ হয়,
পৃথিবীটা যদি স্বপ্নের দেশ হয়
তবে কেমন হোতো তুমি বলো তো?

দেবদত্ত বলে, ইলা, তুমি সাহিত্য অনুরাগী। তুমি লিখবে ফরিদাবাদের ফিরিস্তি। তোমার লেখা প্রকাশ পাবে সাংস্কৃতিক আড্ডায়।
– রাজা, আমার এখনের সখী ভাস্বতী, শর্মিষ্ঠা, সুতপা, অঞ্জলি এরাও যে যেতে চায় আমার সাথে।
– তথাস্তু রানী, আমার ওখানে আছেন মনালি, অদিতি, রীতা, সুপর্ণা, তাঁরাও তোমার সঙ্গী হবে। আর এই ছোট্ট বীরমতি হবে তোমার সর্বক্ষণের সখী।

*********

Asim Deb

Add comment