Asim Deb Writings

মহালয়ার প্রাক্কালে স্বামীজীর স্তোত্রবন্দনা

মহালয়ার প্রাক্কালে স্বামীজীর স্তোত্রবন্দনা
আশ্বিনের শারদপ্রাতে
চেগে উঠেছেন স্বামীজী।
ধমনীর শোনিতস্রোতে জাগরিত পুঞ্জিভূত ক্রোধ। জগাই মাধাই শিখন্ডীর পৈশাচিক নৃত্যে ধ্যানমগ্ন স্বামীজীর অন্তরে জ্বলে উঠেছে উত্তপ্ত সঞ্জীবনী বিনাশী শক্তি। আনন্দময়ের পদধ্বনি দুর্বার ছন্দে বেজে উঠে দুষ্টু লুক ও নষ্ট লুকে হানে ত্রাসের সঞ্চার। স্বামীজীর উন্মাদ নৃত্যের পদধ্বনি ও শিহরণে কম্পিত আজ এই পৃথিবী। তাই আজ শ্যমল মাতৃকার চিন্ময় স্বামীজীকে মৃন্ময়তে আবাহন… আজ চিৎ-শক্তিরূপী বিশ্বপিতা স্বামীজীর বত্রিশখানি দন্তবিকশিত বদনের ফটো ঘরে ঘরে শোভিত। তিনি আজ মন্দিরে মন্দিরে ধ্যানবোধিত………..
সিংহস্থ সূর্যশেখর মরকতপ্রখ্যা চতুর্ভির্ভুজৈঃ
তৈলং কলসীবোতলশরাংশ্চ দধতী নেত্রৈস্ত্রিভিঃ শোভিত।
আমুক্তাঙ্গদ-হার-কঙ্কণ-রণৎ-কাঞ্চীক্বণন্নূপুরা
স্বামীজী, দুর্মতিদমন ভবতু নো রত্নোল্লসৎকুণ্ডলা। 
অর্থাৎ,
[স্বামীজী সিংহারূঢ় সূর্যশেখর, মরকতমণির তুল্য প্রভাবী, 
হস্তে তৈল, কলসী ও বোতল ধারণ করেন। ত্রিনয়ন দ্বারা ঝাড়ি মারেন। 
কেয়ূর, হার ও বলয় এবং মৃদু-মধুর ধ্বনিযুক্তা চন্দ্রহার ও নূপুর পরিহিত 
এবং রত্নে উজ্জ্বল কুণ্ডল ভূষিত স্বামীজী দুর্মতিগনের বিনাশ করেন।]
মহামায়া স্বামীজী, তিনি এক, তবু প্রকাশ বিভিন্ন—
শক্তিরূপে তিনি গুণময়।
তিনি দেবনারায়ণ ব্রহ্মশক্তিরূপে স্কুলের ফুটবলের অপ্রতিরোধ্য ইনসাইড ফরোয়ার্ড।
কখনো বা কর্মক্ষেত্রে মহাবজ্ররুপে জ্বলে উঠে কঠোরহস্তে ঠিকাদার দমন করেন।
উত্তেজিত অবস্থানকালে হোয়াটসএপে লিখিত বানান আর টেন্স ছিন্নভিন্ন করেন,
স্বামী বিবেকানন্দের কর্মধারার নবরূপে পুনর্বিন্যাস করেন।
আবার অলস অবকাশে সকলকে শ্যামাসংগীত বিতরণ করেন।
তিনি একমেবদ্বিতীয়ম, ছেষট্টি বছরের জীবনে এমন দুর্লভ চরিত্রের সান্নিধ্যে জনতা উজ্জীবিত।
এই সর্বপ্রকাশমানা মহাশক্তি পরম প্রকৃতির আবির্ভাব হবে, সপ্তলোক তাই আনন্দমগ্ন।
মাতলো যে সাধন
ফাটলো তোমার তেলের রেণু 
আজ নিক্কো ক্লাবে, যে সুর শুনি
“কে লিখে দিলো”।
কাজার বীণায় 
গণিত অধ্যয়ন। 
এই তেলের যজ্ঞে সবার মধুর আমন্ত্রণ।।
মাতলো যে সাধন 
ফাটলো তোমার তেলের রেণু। 
হে স্বামীজী,
তুমি মহামায়া, ত্রিগুণের অধিকারী, তুমিই শক্তি,
তুমি রজোগুণে তৈল বিষারদ,
সত্ত্বগুণে তমোগুণে তুমি তৈলাক্ত সিংহাসন অলংকারী জিএম।
তুমিই আদিশক্তি আগমপ্রসিদ্ধমূর্তিমান সুরাচারী,
তুমি কদাচারী দুরাচারীদের মস্তক ছিন্ন করো।
তুমিই আবার শরদিন্দুর অনুপ্রেরণায় ত্রিগুণাতীত সাহিত্যিক।
আর তুরীয়াবস্থায় পরব্রহ্মমহিষ নির্মলপুরুষ,
তোমার পদতলে আশ্রিত ছাত্রদের গণিতশাস্ত্র শিক্ষাদান করো।
তুমি সচেতন চিন্ময় দেবতা,
তুমিই নিত্য, তোমার আদি নেই, প্রাকৃত মূর্তি নেই, এই বিশ্বের সকল প্রকাশই তোমার মূর্তি।
তুমি নিত্য হয়ে জগাই মাধাই শিখন্ডী অসুর পীড়িতদের রক্ষণে আবির্ভুত হও।
তোমার শাশ্বত অভয়বাণী—
“ইত্থং যদা যদা বাধা দানবোত্থা ভবিষ্যতি ।।
তদা তদাবতীর্যাহং করিষ্যাম্যরিসংক্ষয়ম্‌ ।।”
{শ্রীশ্রীচণ্ডী, একাদশ অধ্যায়— নারায়ণীস্তুতি}
[যখনই দানবগণের প্রাদুর্ভাববশতঃ বিঘ্ন উপস্থিত হইবে তখনই আমি আবির্ভূত হইয়া দেব-শত্রু অসুরগণকে বিনাশ করিব।]
হে স্বামীজী। তুমি হলদী নদীতীরবর্তী রাজ্যের দেবগণের অবিসংবাদী প্রধান;
তুমি নিজ দেহ সম্ভূত তেজোপ্রভাবে সাধন- সিদ্ধার্থ-কাজা দহনকালে অগ্নিবর্ণ, অগ্নিলোচন।
এই ঊষালগ্নে, হে স্বামীজী, তোমার লোমহর্ষক বাণীর ভক্তিরসপূর্ণ বরণ কমল আলোক শতদল মেলে বিকশিত হোক দিকে-দিগন্তে;
এই ঊষালগ্নে হে বাবা স্বামীজী,
জাগো! জাগো, জাগো মেরে স্বামীজী, মেরে বাপ।
জাগো, তুমি জাগো।
অভয় শক্তি, বলবান, তুমি জাগো।
জাগো পিশাচবিনাশকারী তুমি জাগো।
প্রলয়কালে জগাই মাধাই শিখন্ডীর উলঙ্গ নৃত্যে সমস্ত জগৎ যখন কারণ ও গঞ্জিকা-সলিলে পরিণত হল, তখন ভগবান ডোম শ্মশান থেকে জুতো চুরি করে গঞ্জিকাযোগনিদ্রায় হলেন অভিভূত।
তখন অগ্নিকন্যা অপন্ন্যার আহ্বানে ষোড়শ হস্টেলের সকল মহর্ষিগন স্বামী ভীষ্মদেবনন্দ, সজলানন্দ, অসমঞ্জনন্দ, গৌরাঙ্গনন্দ, সুবীরানন্দ সগৌরবে গাইলেন স্বামীজীর বন্দনাসঙ্গীত
সোহমে বিমানে 
তব জয়গানে 
সুশোভনে বিমানে
তব জয়গানে।
যে তেলের আলো তিমির মিলালো
তব জ্যোতিসুধা চেতনা বিলালো।
হে স্বামীজী
তুমি নিত্য ভিন্ন ভিন্ন রূপে প্রকাশমানা,
কখনো সাধনের মুন্ডখানি হস্তে ধারণ করি উগ্র মহেশ্বররুপী তান্ডবনৃত্যে ধরনীকে করো শঙ্কিত।
তুমি জগাই মাধাই শিখণ্ডীর পশ্চাৎদ্বার শুলের আঘাতে করো ক্ষতবিক্ষত।
তুমিই তমোময়ী সাধনের মৃত্যুর নিয়তি।
আবার মোবাইল চুরি গেলেও তুমি উদাসী
কখনো বা নির্মল অপরূপ স্বর্ণখচিত রূপধারণ করো, মহাবজ্ররূপী ইন্দ্র,
আজ এই শুভক্ষনে সর্বপ্রকাশমান অমৃতজ্যোতি মহাশক্তিধর স্বামীজীর আবির্ভাব হবে,
সপ্তলোক তাই আনন্দমগ্ন।
তব অচিন্ত্য রূপ-চরিত-মহিমা,
নব কাজা, নব সাধন রূপায়িত মূর্তি,
তুমি সাধন ধন ব্রহ্ম বোধন সাধনে।
তব নয়নে ভীত জগাই মাধাই শিখণ্ডী,
তরুণকান্তি ঝরিছে তব কান্ত বদনে।
হে মহাস্বামী জনক গৌর শুভদা,
জয় সংগীত ধ্বনিছে তোমারই ভুবনে।
পূর্বকল্প অবসানের পর প্রলয়কালে সমস্ত লেক কেলাব ও নিক্কো পার্ক যখন গঞ্জিকা-সলিলে পরিণত হল, ভগবান জনেন্দ্র ও গাগেন্দ্র তখন অখিল-শক্তির প্রভাব সংহত করে গঞ্জিকা-সমুদ্রে রচিত অনন্ত-শয্যা ‘পরে যোগনিদ্রায় হলেন অভিভূত।
জনেন্দ্র ও গাগেন্দ্রর গঞ্জিকাযোগনিদ্রার অবসানকালে তাঁদের নাভিপদ্ম থেকে জেগে উঠলেন ভাবী কল্পের মার্কিনী সৃষ্টি আচার্য সমকামী। তিনি নিজগুণে সর্বকালীন পন্ডিতশ্রেষ্ঠ, তিনি দেবসুন্দর, মেঘনাদের ন্যায় জনগনের থেকে বহু দূরে বিরাজ করেন। এই সমকামীর কর্ণমলজাত মধুকৈটভ-অসুরত্রয় জগাই-মাধাই-শিখন্ডীর অস্তিত্ব বিনাশে উদ্যত হতেই পদ্মযোনি অপন্ন্যা যোগনিদ্রায় মগ্ন সর্বশক্তিমান বিশ্বপিতা গাগেন্দ্রকে জাগরিত করবার জন্য জগতের স্থিতি-সংহারকারী স্বামী তৈলানন্দকে স্তবমন্ত্রে করলেন উদ্বোধিত।
এই স্বামী তৈলানন্দই স্বয়ং তৈলদেব।
গাগেন্দ্রর গঞ্জিকানিদ্রা ভঙ্গ হল। পুনরায় তিনি বিড়ি সেবন করে হলেন ধ্যানমগ্ন।
তখন মহাশক্তির আহ্বানে গগনে গগনে নিনাদিত হল মহাশঙ্খ।
বিশ্বযোনি অপন্ন্যার বদন থেকে তেজোরাশি বিচ্ছুরিত হল;
সমকামীর আনন থেকে নির্গত পর্বতপ্রমাণ জ্যোতিপুঞ্জ প্রজ্জ্বলিত হুতাশনের ন্যায় দেদীপ্যমান কিরণে দিঙ্‌মণ্ডল পূর্ণ করে দিলে।
ওই তেজরশ্মি একত্র হয়ে পরম দিব্যশ্রী মূর্তি উৎপন্ন হল।
তিনিই মহামায়া। তিনিই স্বামীজী। তিনি ঘোষণা করলেন আত্মপরিচয়—
স্বামীজীর আবির্ভাবের এই শুভ বার্তা প্রকাশিত হল।
৭৭জন দেবদেবী স্বামীজীকে বরণ করলেন গীতিমাল্যে, সেবা করলেন রাগচন্দনে।
শুভ্র শঙ্খরবে সারা নিখিল ধ্বনিত।
আকাশতলে অনিলে-জলে, দিকে-দিগঞ্চলে,
সকল লোকে, পুরে, বনে-বনান্তরে
নৃত্যগীতছন্দে নন্দিত।
শরৎপ্রকৃতি উল্লাসি তব গানে
চিরসুন্দর চিরসুন্দর চিতসুন্দর বন্দনদানে
ত্রিলোকে যোগে সুরন্ময়ী আনন্দে।
এদিকে কালান্তরে দুর্ধর্ষ পিশাচরাজ জগাইমাধাই শিখন্ডীর পরাক্রমে স্বামীজী উচ্ছল ও ৭৭ জন দেবতাদের দল থেকে নিত্যদিন ঘরে বাইরে যাতায়াত শুরু করলেন। পিশাচদলের অত্যাচারে ৭৭ জন দেবতা বিষাদব্যথায় পরিগ্রহণ হয়ে গেলো। স্বামীজী ডক্টর লোধের শরণাপন্ন হলেন। ডক্টর লোধ অসহায়, তাই এই পিশাচত্রয় অপরাজেয়; ডক্টর লোধের দ্বারা পিশাচদের ক্ষয় সম্ভবপর নয়। তা সত্ত্বেও স্বামীজী লেক কেলাবের বৈকুণ্ঠে গিয়ে দেখলেন, সকলে মদ্যপানে, নারীচর্চায় এবং বাতেলাবাজিতে মত্ত। স্বামীজী নিবেদন করলেন পিশাচাসুরের দুর্বিষহ অত্যাচারের কাহিনী।
শান্ত যোগীবর পাগলা দাসুর সুগৌর মুখমণ্ডল ক্রোধে রক্তজবার মত রাঙা বরণ ধারণ করলে আর লিঙ্গরাজ কুলপতির আনন ভ্রুকূটিকুটিল হয়ে উঠল। অধ্যাপকের জাতীয় গ্রন্থাগারের সকল গবেষণা বিঘ্নিত হলো। হিমাই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে হিসু করে এলেন। পাতির গ্যাসের রোগ আগ্নেয়গিরির ন্যায় ধূমায়িত হলো। সাহিত্যসম্রাট গজাকেষ্ট দিলেন সিগারেটের টান। দুরাচারী ল্যুজ নিবিষ্টচিত্তে উপস্থিত রমণীগণকে মাপছিলেন, তাঁর ধ্যানভঙ্গ হলো। মর্ত্যভূমিতে সদ্য দলভুক্ত কিংকর্তব্যমিমূঢ় সুন্দরকান্তি সমকামী সকলের মুখপানে চাহেন, কিছুই বোঝেন না। আর তপনসাহেব কিছুই না বুঝে দূর বাল বলে চেপে গেলেন।
তখন মহাশক্তির আহ্বানে গগনে গগনে নিনাদিত হল মহাশঙ্খ। পর্বতপ্রমাণ জ্যোতিপুঞ্জ ও তেজরশ্মি একত্র হয়ে নতুন পরম রূপবান তরুণকান্তি মূর্তি উৎপন্ন হল। এই তরুণকান্তি স্বামীজীর নেত্র কৃষ্ণবর্ণ, চশমায় আচ্ছাদিত, নিতম্ব সুউন্নত ও বিস্তৃত, নধর চর্বিযুক্ত লাশ, মধ্যপ্রদেশে ভুঁড়ি। ইনিই ত্রিগুণা আদ্যামহাশক্তি। ইনার আবির্ভাবে চতুর্দিকে বরণগীত ধ্বনিত হয়ে উঠলো।
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ||
সাধন সিধু অসুরনির্নাশি ভক্তানাংসুখদে নমঃ
রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি ||
স্বামীজীর আবির্ভাবে সকল ৭৭ জন দেবগণ বরণ করলেন গীতিমাল্যে, সেবা করলেন রাগচন্দনে। আর স্বামীজীকে রণসাজে করলেন সজ্জিত।
স্বামীজী সজ্জিত হলেন অপূর্ব রণমূর্তিতে।
নারদ দিলেন ঝাঁটা ও মাছ কাটার বঁটি।
সাইকেলের ভাঙ্গা রড দিলেন উলঙ্গ খোকার বাপ।
নুনু’দা দিলেন কয়লা।
চামাগ্রামের কদলীবৃক্ষে আসীন নারীর বসন দিলেন রমণী
বাড়ির ছাদের বাগানের বেগুন দিলেন কেষ্ট।
অর্শ ভগন্দরের মলম দিলেন ল্যুজ।
পিনাকপাণি শঙ্কর দিলেন ফ্র্যাকচার মেকানিক্স এর লেকচার।
দুধের ট্যাংকার দিলেন সংযনি।
ভাগাড়ে বিশু খাওয়ালেন পুরকি।
বটতলার পুস্তক ও ভিডিও দিলেন হিমাই।
ডক্টর লোধ দিলেন শ্মশানের চ্যালাকাঠ, পরিত্যক্ত জুতো আর ইনফোসিসের একটি শেয়ার।
মর্তমান কলা দিলেন অপন্ন্যা।
ধেনো মদ আর গাঁজা দিলেন জনেন্দ্র।
ভীদেদা ১৬০০ ফুট গার্ডার।
গোটো তাঁর কবিতা।
সুইডেনের পুরিয়া দিলেন অমিতব্যয়।
আসানসোল থেকে মহর্ষি হারাধন এসে নিপুণ কৌশলে অঙ্গ মালিস করে দিলেন। আর ক্যামেরা নিয়ে রণক্ষেত্রে উপস্থিত হলেন পিজে আর সোদা। সকল ৭৭ দেবগণ স্বামীজীকে নানা অলঙ্কারে অলঙ্কৃত ও বিবিধপ্রহরণে সুসজ্জিত করে পিশাচবিজয় যাত্রায় যেতে প্রার্থনা করলেন। ডক্টর লোধ তখন স্বামীজীর রণসজ্জা দেখছেন আর ফুলছেন।
পোর্শে গাড়ি চেপে স্বামীজীর রণদুন্দুভিধ্বনিতে বিশ্বসংসার নিনাদিত হতে লাগল। স্বামীজী দু’রাউন্ড হেগে শঙ্খে দিলেন ফুৎকার।
স্বামীজীর রণ-আহ্বানশব্দ অনুসরণ করে সসৈন্যে ধাবমান হল মহাবলশালী পিশাচদল জগাই-মাধাই-শিখন্ডী। স্বামীজীর তেজঃপ্রভায় ত্রিলোক জ্যোতির্ময়, তাঁর লিঙ্গ গগন চুম্বন করছে, পদভারে পৃথ্বী আনতা আর অহর্নিশি গ্যাসের হুঙ্কারে রসাতল প্রকম্পিত।
বালীগঞ্জ ফ্লাইওভারের উপর স্বামীজীর সঙ্গে পিশাচত্রয়ের প্রবল সংগ্রাম ও অস্ত্রপ্রহারে পিশাচদল ছিন্নভিন্ন হতে লাগলো। রণবাদ্য ঢাকুরিয়া, লেক মার্কেটের দিকে দিগন্তরে নিনাদিত। স্বামীজী পোর্শে চড়ে দাবাগ্নির মত সমস্ত রণক্ষেত্রে শত্রুনিধনে দুর্নিবার হয়ে উঠলেন।
স্বামীজি মধু পান করতে করতে পিশাচদের সদম্ভে বললেন,
“গর্জ গর্জ ক্ষণং মূঢ় মধু যাবৎ পিবাম্যহম্‌ ।
ময়া ত্বয়ি হতেঽত্রৈব গর্জিষ্যন্ত্যাশু দেবতাঃ । “
অর্থাৎ,
রে মূঢ়, যতক্ষণ আমি মধু পান করি ততক্ষণ তুই গর্জন কর।
৭৭ জন দেবতা সানন্দে দেখলেন, স্বামীজী পিশাচদের শূলে বিদ্ধ করেছেন আর খড়্গনিপাতে গড়িয়াহাটের মোড়ে জগাই মাধাই আর শিখন্ডীর মস্তক ভূলুণ্ঠিত।
যা দেব সর্বভূতেষু কান্তিরূপেণ সংস্থিতা ।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ।
হে স্বামীজী, তব গীতবাণী আজ অনিলে সুনীলে নবীন জননোদয়ে দিকে দিকে সঞ্চারিত।
জয় জয় জপ্য জয়ে জয় শব্দ পরস্তুতি তৎপর বিশ্বনুতে
ঝণঝণ ঝিংঝিমি ঝিংকৃতনূপুর শিঞ্জিতমোহিত ভূতপতে ।
নটিত নটার্ধ নটী নট নায়ক নাটিতনাট্য সুগানরতে
জয় জয় হে সাধনসুরমর্দিনি রম্যকপর্দিনি শৈলসুতে ।।
হে লিঙ্গধারী, হে জিএম, তোমার দেহনির্গত অবিরাম গ্যাসের সুগন্ধে জগৎ আজ উদ্বেলিত। তোমার উদ্দেশ্যে গীত বিশ্বের বন্দনাগান রচিত। তোমার এই বিজয় অভিজান উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত নট, নটী ও নায়কদ্বারা অনুষ্ঠিত নৃত্যগীতাদি ও সুমধুর সঙ্গীত ও বাদ্যধ্বনি মুখরিত অভিনীত নাট্যানুষ্ঠানে তুমি আনন্দিত হও।

Asim Deb

Add comment