কয়েকটি গল্প
@অসীম দেব
** রামানুজম নারদবাবু ও বুল্লি
** অচিন বাবুর কবিতা
প্রথম গল্প
রামানুজম নারদবাবু ও বুল্লি
অন্য আর পাঁচটা দিনের মতন আজকেও সকালের শুরুটা স্বাভাবিক। বুল্লি সকালের চা বানিয়ে সবার আগে নারদবাবুকেই দেয়, আজও ব্যাতিক্রম নেই। বুল্লির বাঁ হাতে চা, অন্য হাতে দুটি ব্রিটানিয়া মারি বিস্কিট। কিন্তু যা ব্যতিক্রম, বুল্লি নারদবাবুর স্ত্রী গৌরীকে পিছনে রেখে জাদুকরের মতন হাতযশে ও অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় দুটো জিঞ্জার বিস্কিট নারদবাবুর হাতে চালান করে দিল। এই নাটক প্রায়ই হয়। নারদবাবুর স্বাস্থ্য ভালো, নিজেই সচেতন, এমনিতে প্রেসার, সুগার, ইত্যাদি কোনো রোগই নেই, কিন্তু স্ত্রী গৌরী ভাবেন অন্যরকম। তিনি এখন নারদবাবুর স্বঘোষিত চিকিৎসক, স্বামীর খাওয়াদাওয়ায় অপ্রয়োজনীয় নিয়মের সুতীক্ষ্ণ কড়াকড়ি করে রেখেছেন। সহজে বলা যায়, নারদবাবুর যা যা পছন্দের খাওয়া, সেগুলিতেই গৌরীর নিষেধ। আর সেইজন্য বুল্লি এভাবেই লুকিয়ে চোরাই মাল সাপ্লাই দেয়। শুধু সকালের চায়ের সময় নয়, অন্য সময়েও নানান রকমের চোরাই মাল লুকিয়ে সাপ্লাই হয়।
নাটকের পরবর্তী দৃশ্য অন্যরকম, যা কোনদিনই হয় না। চা পর্বের পরেই বুল্লি কেশব নাগের একটা অঙ্কের বই, খাতা, পেন আর সাথে এক প্যাকেট ফিল্টার সিগারেট এনে নারদবাবুকে ধরিয়ে দিলো। এর নেপথ্য কাহিনীটা এখানে বলা উচিৎ।
নারদবাবু যে স্কটিশ চার্চ স্কুলে অঙ্কের সেরা ছাত্র ছিলেন, বিগত দুই দশক ধরে সেটা তিনি সগর্বে সকল পরিচিত লোকজনদের জানিয়েছেন। নারদবাবু নিজেই বলেছেন, স্কুলে মাষ্টারদের স্বপ্ন ছিলো যে আর্যভট্ট, রামানুজমের উত্তরসূরি হবে তাঁদেরই প্রিয় ছাত্র নারদ। সেটাই নারদবাবু ফলাও করে প্রচার কয়েছেন। আর্যভট্ট, রামানুজমের ব্যাপারটা পাড়ার মুদি, নাপিত, রিকশাওয়ালা, বা বাড়ির কাজের লোকেরা বোঝে না, তবে নারদবাবু যে অঙ্কের ব্যাপারে পেলে মারাদোনার সমতুল্য, সেটা এঁরা সবাই এখন বোঝে, আর সেই কারণে ওনাকে খুবই শ্রদ্ধার চোখে দেখে।
কিন্তু ছন্দপতন হলো যখন গত পরশুদিন সন্ধ্যায় প্রতিবেশী ক্লাস এইটের মুনু কেশব নাগের বই নিয়ে হাজির, হনুমানের তৈলাক্ত বাঁশে ওঠার অঙ্কগুলো হচ্ছে না। তাই রামানুজমের উত্তরসূরির কাছে সে অঙ্ক বুঝতে এসেছে। নারদবাবু শুরুতে হ্যাঁ না হ্যাঁ না বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও, গিন্নী গৌরীর এক বিরাটি ধমকে খাতা কলম নিয়ে বসলেন, অথচ এক ঘন্টায় এতগুলি অঙ্কের একটি বাঁদরকেও বাঁশের মাথায় তুলতে পারলেন না। মাঝখান থেকে মুনুর খাতার গোটা দশেক পাতা বরবাদ হয়ে গেলো।
এরপরই গতকাল বিকেলে কলেজ থেকে ফেরার পথে বুল্লি কেশব নাগের অঙ্ক বই, তিনখানা খাতা আর এক ডজন পেন কিনে নিয়ে এসেছে। “বাবা, এখন থেকে রোজ সন্ধ্যায় তুমি কেশব নাগের অঙ্ক করতে বসবে, বাঁদরের অঙ্ক দিয়ে শুরু, এরপর নল ও চৌবাচ্চা, নদীতে স্রোতের বিপরীতে নৌকার গতিবেগ, এসব অঙ্ক তোমায় করতে হবে।“
নারদবাবু কিছুতেই রাজি নন। “ইয়ারকি পেয়েছিস?”
“কি মুস্কিল, পাশের বাড়ির মুনু গতকাল কি ধারণা নিয়ে ফিরে গেলো তুমি কি বুঝতে পারছো না? এরপর সে পাড়ার যত মুদী, নাপিতকে রটিয়ে দেবে যে তুমি রামানুজম নও, তখন তোমার প্রেস্টিজটা কোথায় যাবে?”
আর ঠিক তার পরেই, “আজ বেশি নয়, শুধু দু তিনটে প্রাকটিস করো। তাহলেই হবে। নইলে……”
– নইলে কি?
– নইলে কাল সকালে চা পাবে না। আর বিস্কিটও পাবে না।
বুল্লি শেষের পুরো কথাটায় নইলে আর বিস্কিট, এই দুটি শব্দের উপর কেমন যেন সুর চড়িয়ে খানিক জোর দিয়েই বললো। কিন্তু রামানুজনের মাথা বলে কথা, ঠিক ধরে নিয়েছেন।
– ঠিক আছে, ঠিক আছে। বইটা দে একবার ঝালিয়ে নি।
নারদবাবু জানেন যে বুল্লির কথা না মানলে ভবিষ্যতে তিনি অনেক চোরাই ইনসেনটিভ থেকে বঞ্চিত হবেন।
নারদবাবু খাতা নিয়ে বসলেন, কিন্তু ভাঙ্গে তো মচকায় না। “এত খাতা আর পেন লাগবে না।“
– লাগবে বাবা, লাগবে। একটা অঙ্ক করতেই তো তোমার দুটো পেন ভাঙবে।
নারদবাবু চুপ করে গেলেন, বেশি তর্ক করলে চায়ের সাথে জিঞ্জার বিস্কিট বন্ধ হয়ে যাবে।
মেয়েটিকে বলতে হয় না। সারাদিনের পর কলেজ থেকে ফিরেই রামানুজমের জন্য চা নিয়ে উপস্থিত, আর চোরাই বিস্কিট। আজ লুকানোর ব্যাপার নেই, গৌরী অন্য ঘরে টিভি দেখছেন। “বাবা, এটা কিন্তু আমারও প্রেস্টিজ, প্লিজ খেয়াল রেখো।“ নারদবাবু কিভাবে না বলেন? এরকম স্নেহের সম্পর্কে না বলা যায়?
গল্পের এতটুকু গতকাল সন্ধ্যাবেলার।
আর পরবর্তী পর্যায়ে আজ সকালে এই মুহুর্তে নারদবাবুর চা পর্ব শেষ, আর বুল্লি কেশব নাগের অঙ্ক বই, খাতা, পেন আর সাথে এক প্যাকেট ফিল্টার সিগারেট এনে নারদবাবুকে ধরিয়ে দিয়েছে। সিগারেট দেখে গৌরী রেগে আগুন। “তোমার কি মাথা পুরোটাই খারাপ হয়ে গেলো? ওনাকে সিগারেট দিলে?”
বুল্লি স্মার্ট, সপ্রতিভ, “আরে মা, বোঝার চেষ্টা করো। বাবার এখন ব্রেন কাজ করছে না। সিগারেটে দু তিনটে টান মারলেই ব্রেন খুলে যাবে।“
– আমাকে এসব বোঝানোর চেষ্টা করো না। দুজনের মধ্যে সম্পর্কটা বোঝার চেষ্টা করো।
বুল্লি মানবে না, ইচ্ছে করেই রাগানোর জন্য প্রশ্ন করলো, “আচ্ছা মা, তুমি সিগারেটের কি বোঝো? কোনোদিন খেয়েছো?”
– আমি জানি না, তোমরা দুজনে যা খুশী করো।
গৌরী ভেতরের ঘরে চলে গেলেন।
আর বুল্লি নারদবাবুর চোখাচোখি হতেই বুল্লি চোখ টিপে দিলো। “কিন্তু বাবা, এই বাঁদরের অঙ্ক তোমায় কষতেই হবে, আমি কলেজ থেকে ফিরে এসে দেখবো।“
আর খুব নিচু গলায়, “কষতে পারলেই ভালো পুরস্কার।”
নারদবাবু আর বুল্লির সম্পর্কটাই এরকম। বুল্লি যেমন প্রকাশ্যে তিরস্কার করে, তেমনি লুকিয়ে পুরস্কারও দেয়।
– যাই, এবার কলেজ যাওয়ার তৈরি হতে হবে।
ভেতরের ঘর থেকে গৌরী জবাব দিলেন, “হ্যাঁ, সেজেগুজে তৈরি হও, ছেলেটি তো মোটর বাইক হাঁকিয়ে তোমায় নিতে আসবে।“
আবার বুল্লি আর নারদবাবুর চোখাচোখি, মুখে মুচকি হাসি।
– মা, ও আমার বয়ফ্রেন্ড, স্কুলে একসাথে পড়েছি, এখন কলেজেও আমার সাথে এক ক্লাসে পড়ে।
গৌরীর পছন্দ নয় যে ছেলেটি রোজ এসে বাড়ির বাইরে থেকে প্যাঁ পোঁ হর্ন বাজায়। তবু বলার জন্য বললেন, “এই হয়েছে, যত্তসব আজকালকার মেয়েদের বয়ফ্রেন্ড আর বয়ফ্রেন্ড।“
নারদবাবুর অনুপ্রেরণায় বুল্লিও মজা পেয়েছে, “মা, বয়ফ্রেন্ডের তুমি কি বোঝো? তোমার কি ছোটবেলায় বয়ফ্রেন্ড ছিল?”
গৌরী আর কথা বাড়ালেন না।
নারদবাবুর ছেলে প্রসূন এসব জাগতিক ব্যাপারে থাকে না, সে অফিস চলে গেলো। আর বুল্লি গেলো বাথরুমে, কলেজের জন্য তৈরি হতে হবে। এরপর কিছু ব্রেকফাস্ট করে নিজের ঘরে গিয়ে বুল্লি হাঁক দিলো, “বাবা, তোমার না কান্ডজ্ঞান বলে কিছু নেই। দেখে যাও, কি করে রেখেছ?”
হাঁক শুনে নারদবাবু ভেতরে গেলেন।
খুব নিচু গলায় বুল্লি প্রশ্ন করলো, “বাবা, ট্যাঁকে টাকা আছে তো?”
– না রে, অল্পই আছে। মাত্র গোটা পঁচিশ তিরিশ হবে।
– সেকি? এই তো পরশুদিন তোমায় এক’শ টাকা দিলাম।
– সেটাই তো গন্ডগোল হয়ে গেলো। অনুকুলের দোকানে দেখলাম ডিম পরোটা বানাচ্ছে, খেয়ে নিলাম।
বুল্লি কোমরে হাত রেখে কিছুটা কপট রাগের ভঙ্গিমায়, কিন্তু খুবই নিচু গলায় ফিসফিস করে, “তোমাকে নিয়ে না বাবা, আর পারা যায় না, সকালে ব্রেকফাস্ট করে আবার অনুকুলের দোকানে গিয়ে ডিম পরোটা সাঁটিয়ে দিলে?”
যদিও তিরস্কার, কিন্তু খুবই নিচু গলায়, নইলে গৌরী সবই শুনতে পাবেন। বুল্লির আবার একটা একশ টাকার নোট নারদবাবুকে ধরিয়ে দিলো, “মনে রাখবে, তিন চার দিন কোনো টাকা চাইবে না।“
এই যে নাটকটি হয়ে গেলো, এটিও নিয়মিত হয়, মানে নারদবাবুর পুরস্কার এবং তিরস্কার দুটোই। শেষে আবার নিচু গলায় মনে করিয়ে দিলো, “আর হ্যাঁ, মনে রাখবে, কেশব নাগের অঙ্ক না হলে আর টাকা সাপ্লাই হবে না।“
ঘরের বাইরে আসতেই গৌরী জানতে চাইলেন, “কি হয়েছিল? এত চ্যাঁচ্যাঁমিচি কেন?”
বুল্লিই ম্যানেজ করে দিলো, “না মা, আমারই ভুল, কিছু নয়।“
“শোনো মেয়ে, তাড়াতাড়ি ফিরবে, আজ তোমার বড়পিসির বিয়ের চল্লিশ বছর, আমাদের তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে।“
– হ্যাঁ, জানি মা, ঘোড়াপিসির বাড়ি, তাড়াতাড়িই চলে আসবো।
নারদবাবু ধমক দিলেন, “মানে, আমার দিদিকে তুই ঘোড়া বললি?”
ঠান্ডা মাথায় বুল্লি জবাব দিলো, “বাবা, বড়দিদি, ঘোড়াপিসি এসব বাদ দাও। এখন তোমার মাথায় থাকবে শুধু কেশব নাগ, কেশব নাগ, আর বাঁদর। অন্যকিছু নিয়ে একদম ভাববে না। আর যদি মাথায় অঙ্ক না খেলে, তাহলে একটা কি দুটো সিগারেট খেয়ে নেবে, দেখবে মাথা আপনাআপনি খুলে যাবে।“
গৌরী শুনলেন, কিছুই বললেন না। কারণ বলে লাভ নেই।
গৌরী আর নারদবাবুকে প্রণাম করে বুল্লি কলেজ রওয়ানা দিলো। আর নারদবাবু বেরোলেন নিজের মর্নিং ওয়াকে, মানে বাসে করে চার স্টপ গিয়ে অনুকুলের দোকানে বসে পরোটা ডিম তরকারি যা পাবেন সাঁটাবেন। বুল্লি আজকেও একশ টাকা দিয়েছে। বলে রাখা ভালো, নারদবাবু নিজের পাড়ায় চা ডিম পরোটা সাঁটান না, কেউ দেখে ফেলতে পারে।
এরপর সারাটা দিন গতানুগতিক। তফাতের মধ্যে এই যে বুল্লি ফেরার সময় কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া গিয়ে কেশব নাগের অঙ্কের সমাধান বইটা গিফট প্যাক করে নিয়ে এসেছে। উনার বইয়ের প্রতিটি অঙ্ক এখানে কষে দেওয়া আছে।
বাড়ি ঢুকলো গিফট প্যাক হাতে। “বাবা, তোমার জন্য একটা দারুণ দারুণ দারুণ গিফট এনেছি, এই নাও।“
গিফট প্যাক নারদবাবু নেবার আগেই গৌরী টেনে নিলেন। প্যাক খুলে মুখে আর হাসি ধরে না। “এই নাও তোমার গিফট। এখন থেকে তোমার বাঁদর, চৌবাচ্চা, নৌকার গতিবেগ সব অঙ্ক ফটাফট হয়ে যাবে।“
বুল্লির চিন্তা অন্যরকম। “তোমরা ফটাফট তৈরি হয়ে নাও। আমি পাঁচ ঘন্টার গাড়ি বুক করে দিয়েছি। আর আধ ঘন্টায় এসে যাবে।“
সন্ধ্যাবেলায় সকলেই নারদবাবুর দিদির বাড়ি এসে গেছেন। নারদবাবুর কলেজের বন্ধু এবং সম্পর্কে বেয়াই চন্দনবাবু দুজনে এক কোনে বসে কফি পান করছেন। খানিক বাদে বুল্লি এসে কয়েকটা ক্রীম বিস্কিট ধরিয়ে দিলো, “বাবা, ম্যানেজ করলাম। ক্যাটারার ব্যাটা লুকিয়ে রেখেছিল।“ বলে আর দাঁড়ালো না, “তোমরা গল্প করো, আমি আসি।“
পরম তৃপ্তির সাথে একটা বিস্কিট মুখে দিয়ে নারদবাবু বললেন, “চন্দন, একটা কথা না বলে থাকতে পারি না। আমার জীবনে এই বুল্লি হলো ঈশ্বরের এক উপহার। কি যে মায়ায় বেঁধে রেখেছে বোঝাতে পারবো না।“
চন্দনবাবু সামান্য মাথা নেড়ে বললেন, “সবই জানি রে নারদ, তবে তুই কিন্তু ওকে একটু বেশিই আস্কারা দিস। এতটা ছেড়ে দেওয়া ঠিক নয়।“
কথাটা নারদবাবুর একদমই ভালো লাগলো না। “আস্কারা মানে? স্নেহ আর আস্কারা এক হলো? আর ছেড়ে দিয়েছি মানে? আমি কি দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখবো?”
– আরে না না না, তা নয়। এই যেমন ধর রোজ ছেলেটার সাথে বাইকে চেপে কলেজ যায়। কেন? বুল্লি বাসে করে যেতে পারে না? আজ আবার শুনলাম তোকে সিগারেট কিনে দিয়েছে? এটা কেমন হলো? সম্পর্কের একটা লাগাম বা মর্যাদা থাকবে না?
নারদবাবু চুপ করে গেলেন। খানিক পরে বললেন, “চল, তোর সাথে কথা আছে, একটু বাইরে গিয়ে কথা বলি, এখানে বাড়ির ভেতরে বড্ড লোকজন। এখানে কথা হবে না।“
চন্দনবাবু বুঝলেন, বন্ধু তাঁর কথায় মনে আঘাত পেয়েছে। “শোন নারদ, আমি কিন্তু সেরকম সিরিয়াস কিছু বলতে চাই নি। তুই ভুল বুঝছিস।“
দুজনে বাড়ির বাইরে রাস্তায় খানিক দূরে এসে দাঁড়ালেন।
“আচ্ছা চন্দন, যে ছেলেটা রোজ বাইকে করে বুল্লিকে কলেজ নিয়ে যায়, তাঁকে তুই কতদিন চিনিস?”
– কতদিন মানে? একদম জন্ম থেকে চিনি। ও তো বুল্লির সাথে নার্সারি থেকে শুরু করে এখন একসাথে কলেজেও পড়ছে। খুবই ভালো ছেলে।
আবার নারদবাবু চুপ করে আছেন।
– কি রে নারদ? কি হলো তোর? আমি সরি, তোকে আঘাত দিতে আমি চাই নি।
খানিক থেমে নারদবাবু বললেন, “চন্দন, তোর মেয়েকে তুই আঠারো বছর ধরে রোজ চব্বিশ ঘন্টা দেখেও নিজের মেয়েকে চিনতে পারলি না, জানতে পারলি না। অথচ আমি মাত্র আট মাসেই ওঁকে চিনে নিতে পেরেছি।“
“হ্যাঁ, আরও কথা আছে। তোর মেয়ে আমাকে সিগারেট কিনে দিয়েছে, এই খবরটা তুই পেয়ে গেলি। কিন্তু আমার সন্মান রাখার জন্য সে যে কেশব নাগের বই কিনে নিয়ে এসেছে, সেই খবরটা তুই পেলি না।“
চন্দনবাবু অবাক। “মানে? এই বয়সে তোকে কেশব নাগের অঙ্ক কেন করতে হবে?”
– হ্যাঁ রে চন্দন করতে হবে, আমকে তেল লাগানো বাঁদরের ওঠানামার অঙ্ক শিখতে হবে, কারণ এখানে আমার সন্মানের প্রশ্ন জড়িয়ে আছে। এই কথাটা আমার স্ত্রী, তোর জামাই এঁরা কেউ বুঝতে পারে নি। তোর মেয়ে, মানে আমার পুত্রবধু বুল্লি কিন্তু বুঝতে পেরেছে। এই যে খানিক আগে আমাদের হাতে ক্রীম বিস্কিট দিয়ে গেলো, এসব তুই বুঝবি না। আমার স্ত্রী বা আমার ছেলেও বুঝবে না। কিন্তু তোদের ভাষায় পরের বাড়ির মেয়ে বুল্লি, সে বোঝে।
চন্দনবাবু কিছুই বুঝতে পারেন না।
“শোন চন্দন। বুল্লি তোর মেয়ে। ওঁর ব্যাপারে তুই নিশ্চয়ই বলবি। কিন্তু ও আমাকে যতটা বকাঝকা করে, ততটাই স্নেহ করে। ওঁর খুশী তুই কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করিস না। ওঁকে ওঁর মতন থাকতে দে। আর আমাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক যেরকম চলছে, প্লিজ বাধা দিস না।“
“আরও একটা কথা। আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, তোর মেয়ে, মানে, আমার বুল্লি জীবনে এমন কোনো কাজ করবে না যাতে তোর বা আমার পরিবারের মাথা হেঁট হয়।“
******
দ্বিতীয় গল্প – অচিন বাবুর কবিতা
অচিন আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু, প্রাক্তন সহকর্মী ও প্রতিবেশী। দুজনেই দিল্লিতে বেশ কিছু বছর এদিক ওদিক চাকরি করে অবশেষে শেষের ৩২ বছর আমরা একই অফিসে কাজ করেছি, একই দিনে অবসরগ্রহণ করেছি। সেও আজ প্রায় দশ বছর হয়ে গেলো।
অচিনের জীবন চিরকালই খুব সাধারণ। নিজেকে বুদ্ধিজীবি ভাবে না, নীরদ চৌধুরীর আত্মঘাতী বাঙালী, বা লাল সূর্য্য বিপ্লবের চিন্তাধারা, বা কিছু না জেনেই অনর্থক অহেতুক আলোচনা বা তর্ক বিতর্ক, মোদী আম্বানীর বা বিরাট কোহলি গৌতম গম্ভীরের স্ট্রাটেজিক ভুল নিয়ে হোয়াটসএপে মতামত দেওয়া, …… এসব জাগতিক ব্যাপারে সে থাকেই না। একেবারেই সাধারণ নির্ঝঞ্ঝাট জীবন। এহেন অচিনের মাথায় এখন কবি হওয়ার বাসনা জেগেছে।
ব্যাপারটা খুবই সাধারণ কিন্তু অচিনের জন্য চ্যালেঞ্জ। সে একটা কবিতা লিখেছিল, জীবনের প্রথম সাহিত্যচর্চা, সেই কবিতা পাড়ার দুর্গাপূজায় স্যুভেনিরে ছাপা হয় নি। সম্পাদক জানিয়েছে, আরেকটু ভালো কবিতা দিতে। সম্পাদক যা বলেন নি, সে হলো “এ কি কবিতা হয়েছে?”
এবং এখান থেকেই সূত্রপাত।
অচিনের সেই কবিতা আমি পড়েছি, মানে সেই আমাকে পড়তে দিয়েছিল। কবিতাটি মা দুর্গাকে উদ্দেশ্য করে, এইরকম ছিল
তুমি আসবে তাই
আমি পাড়ার পূজায় দিয়েছি চাঁদা।
তোমায় আমি বরণ করবো হাতে সিঁদুর কৌটা নিয়ে
আর থাকবে ধান দুর্বা পান সুপারি।
রেকাবিতে থাকবে ভিআইপি সুইটসের সন্দেশ
আর দ্বারিক ঘোষের দই।
বিসর্জনের বরণের সময়
মুখে ঠুসে দেবো সিঁদুর মাখা সন্দেশ।
তুমি ঢাকের আওয়াজের সাথে চলে যাবে ট্রাকে
আর আমি বিষন্ন মনে ফিরে আসবো নিজের ঘরে।
অচিনের এই কবিতা পড়ে আমিই বা কি বলি? বেচারার জীবনে প্রথম কবিতা লেখার প্রয়াস। ওকে সান্ত্বনা দিলাম, উৎসাহ দিলাম, “অচি, তোর কবিতা আজ একজন বাতিল করেছে। তুই সামনের বছর ভালো থীম নিয়ে দারুণ একটা কবিতা লিখে এই সম্পাদকের মুখে ছুঁড়ে দে। টেক ইট এজ এ চ্যালেঞ্জ।“
কিন্তু আমার এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণের উপদেশটাই কাল হলো। দিন তিনেক বাদে সস্ত্রীক আমাদের বাড়ি এসে জানালো, “আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, এক হাজার কবিতা লিখবো।“
আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই অচিনের স্ত্রী বললো, “দাদা, ওকে প্লিজ একটু বোঝান। কয়েকদিন ধরেই মাথায় ভুত চেপেছে। গত সত্তর বছরে যে লোকটা একটাও এক লাইনের কবিতা লেখা তো দূরের কথা, একটা কবিতাও যে পড়ে না, সে এখন এক হাজার কবিতা লিখবে? শেষে পাড়া প্রতিবেশী বন্ধুরা যেন হাসাহাসি না করে।“
আমিও বলি, “অচি, কি পাগলামো করছিস? হাজার কবিতা কি ছেলেখেলা?”
অচিন মানবে না, “কেন? রবীন্দ্রনাথ নজরুল চার হাজার লিখেছে, এখনের শক্তি চট্টোপাধ্যায় আড়াই হাজার লিখেছে। আর আমি মাত্র এক হাজার পারবো না?”
অচিন শুনবে না, তাঁর কবিতা লেখা শুরু হয়ে গেলো। প্রতি সপ্তাহে গোটা পাঁচেক। এবার সেগুলি সে তাঁর বিভিন্ন হোয়াটসএপ গ্রুপে এবং আরও প্রায় ষাট সত্তরজনকে নিয়মিতভাবে পাঠাতে শুরু করে দিল। কবিতার তো বিষয় চাই। অচিন টিভি নিউজ থেকে তাঁর প্রথম কবিতার অনুপ্রেরণা পেলো।
ভারতীয় ক্রিকেটের ব্যাটসম্যান
ও প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলি
টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন।
তিনি আমাদের সকলের হৃদয়ে স্থান পেয়েছেন।
তাঁর এই ঘোষনা অসংখ্য ভক্ত
এবং ক্রিকেট অনুরাগীদের জন্য হৃদয়বিদারক।
তাঁর অবসরের আবেগঘন বার্তা
ভারতীয় ক্রিকেটে একটি যুগের অবসান ঘটায়।
তার নেতৃত্বে ভারতের ক্রিকেটে এসেছে পরিবর্তন
এসেছে আগ্রাসন, বিশ্বাস।
অনুপ্রাণিত করেছিলেন একটি প্রজন্মকে।
প্রার্থনা করি, তাঁর অবসরের সিদ্ধান্ত
একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
আমি এই কবিতা পেয়েই ফোন করলাম, “অচি, তুই কি ক্ষেপেছিস? খবরের কাগজের এক লাইনকে টুকরো টুকরো করে তিন চার লাইনে ভাগ করে দিলেই কবিতা হয়ে যায়?”
অচিন শুনলো, জবাব দিলো না।
কয়েকদিন বাদেই আরেকটা এলো, সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে। কবিতার প্রথমটা এইরকম
তারা যাচ্ছিল আগ্রা থেকে ইউরোপ প্যারিসে
টেক অফ হতেই যান্ত্রিক ত্রুটি,
বিমান ভেঙে পড়লো তাজমহলের চূড়ায় ……………
আমি ফোন করলাম, “অচি, এবার পাবলিক তোকে প্যাঁদাবে। প্লেন ভেঙ্গেছে আমেদাবাদে।“
– হোক আমেদাবাদ। আমার প্লেন সোজা তাজমহলে ঢুকে যাবে। কবিতায় সেনসেশন চাই, সেনসেশন। আমার কবিতার অর্থ তোর মত পাবলিক বুঝবে না।
আমি চুপ করে গেলাম।
এবার প্রায় রোজই একটা করে কবিতা আসে। ওর কবিতাগুলো পড়ে এখন কবিতা সম্বন্ধেই আমার মনে এক ভীতির সঞ্চার হয়েছে। কিন্তু ওঁর কবিতার প্লাবন অব্যাহত, এবং বিভিন্ন ধরণের কবিতা। যেমন
আজি ঝরঝর মুখর পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে
গগনে গরজে মেঘ, নেই ভরসা।
আর বসে আছি আমি কূলে একা।
আমার মন এখন মেঘের সঙ্গী হয়ে
নিঃসীম শূন্যে উড়ে চলে দিগ্দিগন্তের পানে
আর শ্রাবণবর্ষণসঙ্গীত গেয়ে চলে
রিমিঝিম রিমিঝিম রিমিঝিম।
তোমার ঝড়ে ওঠে বাউল বাতাস
তোমার মালা গাঁথা হয় বজ্রমানিক দিয়ে।
আর আমার মন ক্বচিৎ চকিত তড়িত-আলোকে
উড়ে যায় হংসবলাকার পাখায়।
আমি গিন্নিকে শোনালাম, “দেখো, অচি কি লিখেছে। রবীন্দ্রনাথের কয়েকটা গানের এক দু লাইন জুড়ে দিয়ে নিজের কবিতা বানিয়েছে।“ খানিক বাদে সে নিজেই ফোন করে জানালো যে তাঁর এক বন্ধু এই কবিতার মধ্যে জীবনানন্দকে খুঁজে পেয়েছে।
পরের দিন আরও সাংঘাতিক। সে নাকি মাঝরাতে দুই মোষের গুঁতোগুঁতির স্বপ্ন দেখে ঘুম ছেড়ে উঠে সেই মাঝরাতেই কলম ধরেছে
রাস্তার দুটি ষাঁড়
এতদিন এঁকে অন্যের বন্ধু,
আজ কি হলো?
রাস্তার মাঝে গুঁতোগুঁতি?
প্রথম চার লাইন পড়ে আমি আর পড়িনি।
এরপর থেকে যখনই দেখি অচিনের কবিতা, আমি সঙ্গে সঙ্গে ডিলিট করে দি।
কিন্তু অচিন নিয়ে এলো এক খবর।
“কি রে? খুব তো আমার কবিতা নিয়ে হাসাহাসি করেছিলি। যে সম্পাদক আমার কবিতা রিজেক্ট করেছিল, সেই সম্পাদকই এখন পাড়ার ক্লাব থেকে আমাকে সেরা কবির সন্মান দেবে বলেছে।“
আমি অবাক।
– অচি? সেরা কবির সন্মান? তোকে?
– ইয়েস স্যার। সার্টিফিকেট দেবে, চারিদিকে সত্যেন দত্ত, কুমুদ মল্লিক, নবীন সেন, কালীদাস রায়, জীবনানন্দের ছবি থাকবে, আর আমার ছবি থাকবে মধ্যেখানে।
আমি কিছুই না বুঝে অচিনের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
সে আরও জানালো, “আমার কবিতা এখন বিশ্ব কবি সন্মেলনের পত্রিকায় ছাপানো হবে। জানতে চাইলাম, এই বিশ্ব কবি সন্মেলনের কার্যালয়টা কোথায়?
– বৈঁচিগ্রামে।
অচিন বলে চলেছে, “আমি ওঁদের বলেছি, ক্লাবে ভালো চাঁদা দেবো, ওঁরা আমাকে ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট বানিয়ে দেবে। আর আমি সামনের দুর্গাপূজায় আমার কবিতার বইয়ের স্টল দেবো।“
আমি অবাক। “অচি? তোর কবিতার বই? কবে?”
– কি ভাবিস আমাকে? দুই তিন সপ্তাহ বাদেই পঞ্চাশটা কবিতা নিয়ে আমার প্রথম বই বাজারে আসছে, অচিনের বই। এর মাস দুই তিন বাদে আসবে আমার দ্বিতীয় বই। আর দুর্গাপূজা আসতে আসতে আরও গোটা চারেক হয়ে যাবে।
– কি বলছিস অচি? এক বছরে পাঁচ ছ’খানা কবিতার বই?
– ইয়েস, মিনিমাম পাঁচখানা তো হবেই।
একটু থেমে মনে করিয়ে দিলো, “বুঝলি, হাজার কবিতার জন্য হিসেব করে দেখলাম যে গোটা পনের বই তো হয়েই যাবে।“
*******
রামানুজম নারদ ও বুল্লি –
সাংসারিক পটভূমিকায় একটা অনবদ্য লেখা । লেখার মধ্যে দিয়ে চন্দন বাবুর সাথে অলীক সম্পর্ক তৈরী করে দিলেন।
আমি খুশি। সুন্দর উপস্থাপনা।
বুল্লির গল্পে দুটি দিক
প্রথমে নাটকীয়তা, পাঠকরা প্রথম থেকেই ভাবছে বুল্লির বাবা নারদবাবু। সেটা পরিস্কার হবে একদম শেষে।
দ্বিতীয়, নারদ বলছে, তোরা সিগারেট দেওয়ার খবর পেলি, কিন্তু সে আমার সন্মান রক্ষা করার জন্য কি করলো সেই খবরটা পেলি না।
আর শেষে, নারদ বলছে বুল্লি চিরকাল দুই বাড়ির সন্মান বজায় রাখবে।
পিতা না হয়েও অন্য ঘরের মেয়ের থেকে পিতার মতন স্নেহ ভালবাসার উপর ভিত্তি করে সুন্দর একটি সামাজিক গল্প।
পড়ে খুব ভালো লাগলো
বুল্লি ও নারদ বাবুর কড়চা পড়ে ভালো লাগলো। আজকের দিনে, পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রকোপে যখন বাবা মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান দুরত্ব (জেনারেশন গ্যাপ নামক টানাপোড়েন) দৈনন্দিন জীবনে প্রায় স্বাভাবিক একটা ব্যাপার বলে আমরা স্বীকার করে নিয়েছি, তখন বুল্লিরা মনে আশার আলো দেখায়।
সুন্দর লেখা।
প্রথম গল্পে বুল্লি আর নারদবাবুর আন্তরিক সম্পর্ক খুব সুন্দর সহজ করে লেখা হয়েছে। এক তরুণী তাঁর বয়স্ক শ্বশুরের সাথে শুধু বন্ধুর মতোই খোলামেলা সম্পর্ক নয়, সে তাঁর শ্বশুরের ভালোমন্দ চাহিদাগুলিরও খেয়াল রাখে। আর সবথেকে বড় কথা, প্রতিবেশীর কাছে সন্মান বজায় রাখতে কেশব নাগের বই কিনে আনা। খুব ভালো লাগলো বুল্লির এই চরিত্রের চিত্রায়ণ।
আর দ্বিতীয় গল্পে, অচি বা অচিন তো এখন পাড়ায় পাড়ায় গলিতে গলিতে। সবাই এখন কবিতা লেখেন। খুব ভালো একটা স্যাটায়ার গল্প।
প্রথম গল্পটিতে পুত্রবধূ আর শ্বশুরের সহজ সরল আন্তরিক সম্পর্ক পড়ে খুব ভালো লাগলো। সবথেকে ভালো লেগেছে যখন প্রতিবেশীর কাছে সন্মান বজায় রাখতে পুত্রবধূ কেশব নাগের বই কিনে আনলো। বুল্লির চরিত্রটা মন কেড়ে নেয়।
আর দ্বিতীয় গল্পে, অলিতে গলিতে কবির ছড়াছড়ি। এটি সঠিক একটা স্যাটায়ার গল্প।
দুটি গল্পই দারুণ।
তবে দ্বিতীয় স্যাটায়ার গল্পটা আমার বেশি ভালো লেগেছে। অচিন চরিত্রের একগুঁয়েমি দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
আর আজকাল তো যে পারছে কবিতা লিখছে। ভয় হয়, এত এত কবিতার গুচ্ছ পাবলিকের মনে আতঙ্ক না সৃষ্টি করে!!
“রামানুজম নারদবাবু ও বুল্লি” পড়ে নিলুম। মধুর গল্প, তার থেকে মধুর এমন চিন্তা। আমার দুই পুত্রবধূর সঙ্গে আমার সম্পর্ক কিছুটা এমন বলে, আরও মধুর লেগেছে।
শুধু “ঘোড়াপিসি” ব্যাপারটা পরিষ্কার হলো না। সেই বাড়িতেই বুল্লির বাবা, চন্দনবাবুও নিমন্ত্রিত?
আর মোটরবাইকে আসা ছেলেটা যদি জামাই হয়, তাহলে গৌরীর আপত্তি কেন?
দুটোই একটু স্পষ্ট করে দেয়া যায়?
রাখু
দুটো দু’রকম গল্প, আর দুটোই খুব ভালো লেগেছে।
গল্প লেখার অভ্যাস ছাড়িস না।
দুটি ভিন্নধর্মী গল্প, এবং দুটোই বেশ ভালো লিখেছেন। প্রথমটিতে অন্য পরিবারের মেয়ে কিভাবে শ্বশুরবাড়ি এসে একাত্ম হয়ে যায়, খুব সুন্দর প্রেক্ষাপটে লেখা।
আর দ্বিতীয়টিতে অচিনের জন্য করুণা হয়, বেচারা এক হাজার কবিতা লেখার ধনুর্ভঙ্গ পণ করেছে। অচিনের জন্য শুভেচ্ছা রইলো।
পড়ে ভালো লাগলো।
সুন্দর পরিচ্ছন্ন দুটো গল্প, দুটোই ব্যক্তিবিশেষের মনস্তত্ত্ব বিষয়ক। একটিতে এক কিশোরীর বুদ্ধিমত্তা অন্যটাতে একজনের একগুঁয়েমি। দুটো গল্পতেই চরিত্রগুলো পরিষ্কার ফুটিয়ে তুলেছেন।
ভালো গল্প।
পড়ে ভালো লাগলো।