Hunza Valley: Life in A Natural Paradise
@Asim Deb
হুনজা (স্থানীয় নাম বুরুশাস্কি), পাকিস্তানের গিলগিত-বালতিস্তান এলাকার এটি একটি পাহাড়ি উপত্যকা। পাকিস্তানের উত্তর দিকে আফগানিস্তানের ওয়াখান করিডোর এবং চীনের জিয়ানজিয়াং এলাকার সীমান্তবর্তী একটি অঞ্চল। ভৌগোলিক অবস্থানে হুনজা ৩টি এলাকা নিয়ে গঠিত, আপার (উচ্চতর) হুনজা (গজাল), কেন্দ্রীয় হুনজা (হুনজা উপত্যকা) এবং লোওয়ার (নিম্নতর) হুনজা (শিনাকি)।
হুনজা ১৮৯২ সাল থেকে আগস্ট ১৯৪৭ পর্যন্ত ব্রিটিশ ভারতের সহায়ক জোটে একটি দেশীয় রাজ্য ছিল, ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে তিন মাসের জন্য নিরপেক্ষ রাজনৈতিক অবস্থানের পর ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। বর্তমানে হুনজা পাকিস্তানের গিলগিত বালতিস্তানের উত্তরে অবস্থিত। এর ভৌগলিক সীমানা দক্ষিণে গিলগিট এজেন্সি, পূর্বে নগর রাজ্য, উত্তর-পূর্বে চীনের জিনজিয়াং, এবং উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তান। রাজ্যের রাজধানী ছিল বাল্টিট (করিমবাদ নামেও পরিচিত)। এখন পাকিস্তানের হুনজা-নগর জেলার আলিয়াবাদ তহসিল। ২০০০ সালের আদমসুমারি অনুযায়ী হুনজা উপত্যকার জনসংখ্যা প্রায় ৮৭০০০, যারা প্রধানত ইসলাম ধর্মের শিয়া সম্প্রদায় ভুক্ত নিজামী ইসমাইলি। কথ্য ভাষা বুরুশাসকি।
Hunza Valley: A Natural Paradise
Nestled in the rugged northern terrains of Pakistan, the enchanting Hunza Valley has long been a beacon for adventurers, nature enthusiasts, and peace seekers from around the world. Located in Gilgit-Baltistan, Hunza is a breathtaking region that offers unparalleled views of the Himalayas and the Karakoram Range, showcasing some of the most pristine landscapes on Earth. The valley is celebrated not only for its natural beauty but also for its rich history, diverse culture, and the resilience of its people.
Geography and Landscape
Hunza Valley lies along the Hunza River and is surrounded by snow-capped mountains, lush-terraced fields, and vibrant cherry blossom trees. At an elevation of 2,438 meters (7,999 feet), the valley offers crisp, clean mountain air and a cool climate that contrasts sharply with the lowlands of Pakistan. One of the most iconic peaks visible from Hunza is Rakaposhi, which stands at 7,788 meters (25,551 feet), as well as Ultar Sar, Passu Cones, and Ladyfinger Peak. The valley itself is divided into three main regions: Upper Hunza (Gojal), Central Hunza, and Lower Hunza.
One of the best ways to experience the valley is to take the Karakoram Highway, which is considered one of the most scenic drives in the world. The road winds through the mountains, offering stunning views of the valley below. Along the way, travelers can stop at small villages to experience local culture and sample traditional food.
হুনজা উপত্যকা প্রকৃত অর্থে বহির্বিশ্বে এক অচেনা অজানা অঞ্চল। সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় এখানকার মানুষের গড় আয়ু প্রায় ১২০ বছর বলে মনে করা হয়। দীর্ঘায়ুর বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসে যখন এক মহিলা ইংল্যান্ডে বিমানবন্দরের নামার পর তাঁর পাসপোর্টে দেখা যায় মহিলার যে বয়সের উল্লেখ করা হয়েছে, তাহলে সেই সময় মহিলার বয়স ১৫০ বছর। আবার ১৯৮৪ সালে লন্ডন হিথরো বিমানবন্দরে পাকিস্তান থেকে আসেন সৈয়দ আব্দুল মবুদু নামে এক বৃদ্ধ হুনজা। পাসপোর্টে তাঁর জন্ম সাল ছিল ১৮৩২, অর্থাৎ তাঁর বয়স তখন ১৫২ বছর। ইমিগ্রেশন অফিসার ও সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে বিশ্বে এই ঘটনার সাড়া পড়ে যায় বিশ্বে। গবেষকরা আসতে শুরু করেন হুনজা উপত্যকায়।
পাকিস্তানের এই অঞ্চলটি গোটা বিশ্বের সমস্যা থেকে অনেক দূরে। লোককথা অনুযায়ী এই সম্প্রদায়ের মহিলারা ৬০ থেকে ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত কোনও সমস্যা ছাড়াই গর্ভবতী হতে পারেন।
লোকেরা সাধারণত বার্লি, বাজরা এবং গমের আটা খান, যা শারীরিকভাবে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। দাবি করা হয়, হিমালয়ের উচ্চভূমিতে দূষণমুক্ত পরিবেশ, পানীয় জলে প্রাকৃতিক পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি খনিজ পদার্থের প্রভাব, সারাবছর হিমশীতল জলে স্নানের অভ্যাস (শীতকালে উপত্যকা বরফে ঢেকে গেলে তখনও হুনজারা গরম জলে স্নান করেন না) এবং হুনজারা খান কম, কিন্তু পরিশ্রম করেন বেশি। কিছু গবেষক বলছেন হুনজারা নিরুত্তাপ ও উদ্বেগহীন জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তাই তাঁরা মানসিক চাপের সঙ্গে যুক্ত অসুখবিসুখে ভোগেন না। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার নিয়ন্ত্রনের কারণেই হুনজা উপজাতিরা এতো বছর অনায়াসে বেঁচে থাকেন। জেমস হিলটনের ‘লস্ট হরাইজন’ উপন্যাসে এই দীর্ঘায়ুর বিষয়ের উল্লেখ আছে, যার উপর নির্ভর করে পরবর্তী সময়ে ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রার একটি চলচ্চিত্রে তৈরি করেন।
বামদিকে ৯৬ বছরের বাবা, ডানদিকে ৭৮ বছরের ছেলে।
হুনজারা তাঁদের খাদ্যতালিকায় রাখেন প্রচুর পরিমাণে শুকনো অ্যাপ্রিকট (খোবানি), লেবু জাতীয় ফল, বাদাম, শিম, ভুট্টা, বার্লি ও বাজরার মতো শস্য। মাখন, পনির, ডিম ও দুধ তুলনায় কম খান। তালিকায় মাংসের পরিমান থাকে খুবই কম। এর পরিবর্তে বিভিন্ন ধরণের সবুজ শাক সবজি ও ফুলমূল হয়ে থাকে তাদের নিয়মিত খাদ্য। এছাড়াও, তুমুরু নামে, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর এক প্রকার উদ্ভিদের পাতা ফুটিয়ে চায়ের মতো পান করেন হুনজারা। দুর্গম স্থানে বাস করার কারণে এবং বিভিন্ন কাজে প্রতিদিনই হুনজাদের প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার হাঁটতে হয়।
অ্যাপ্রিকট ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যামিগডালিন (ভিটামিন বি-১৭) আছে, যা ক্যানসার ও অনান্য রোগ প্রতিরোধে সক্ষম। প্রাচীন রীতি মেনে, হুনজারা বছরে চার মাস শুকনো অ্যাপ্রিকট ফলের গুঁড়োর শরবত ছাড়া আর কিছু খান না। অনেক গবেষক মনে করেন, হুনজাদের দীর্ঘায়ু ও কর্মক্ষম থাকার পিছনে অ্যাপ্রিকট ফলটির ভূমিকা আছে।
এখানের বয়স্কা মহিলাদের বিশ্বের অন্যতম সুন্দরী বলা হয়।
পাকিস্তানের এই সম্প্রদায়ের বয়স্কা মেয়েরাও কিভাবে এত সুন্দরী হয়? হুনজা সম্প্রদায়ের সৌন্দর্য ও সুস্থতার অন্যতম কারণ বলা হয় তাঁদের ভৌগলিক অবস্থান, এমন একটি উপত্যকা যার চতুর্দিকে আছে তিনটি সুউচ্চ পর্বতমালা।
অন্যদিকে পাকিস্তানের এই অঞ্চলে ফলে বিশ্বের সবচেয়ে দামি মশলা জাফরান যা হুনজা সম্প্রদায়ের রান্নায় ব্যবহৃত হয়। এর বিভিন্ন গুনাগুন ত্বকের সুস্থতার জন্য খুবই উপকারি। এছাড়া এই সম্প্রদায়ের মানুষ বিশেষ এক ধরণের লবণাক্ত চা পান করে থাকে। যাতে পাহাড়ি ঝর্ণার জলের সাথে মেশানো হয় ‘তুমুরু’ নামের বিশেষ এক উপাদান।
পাকিস্তানের অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের তুলনায় হুনজা সম্প্রদায়ের লোকেরা শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে অনেক বেশি মার্জিত।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
প্রতিবেশী জম্মু ও কাশ্মীরের মহারাজা রণবীর সিংহের (১৮০০-এর দশকের মাঝামাঝি) সময়কালে হুনজায় তাঁর একটি বাসস্থান ছিল। হুনজার মীর ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরের দরবারে নিয়মিত বার্ষিক শ্রদ্ধা প্রেরণ করেন এবং জম্মু ও কাশ্মীরের মহারাজের অনুগত গণ্য হতেন। এমা নিকলসনের মতে, “সমস্ত প্রমাণ এই সত্যের দিকে ইঙ্গিত করে যে ১৮৭৭ সালের মধ্যে গিলগিট এবং বাল্টিস্তান অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্ত ছিল”। তারা জম্মু ও কাশ্মীরের মহারাজার সার্বভৌমত্বের অধীনে ছিল এবং ২৬ অক্টোবর, ১৯৪৭ সালে “ভারতের নতুন কর্তৃত্বের সম্পূর্ণরূপে” অধিগ্রহণের তারিখ পর্যন্ত এই রাজপরিবারে থেকে যায়। ১৯৪৭ সালের ৩ নভেম্বর শাসক মোহাম্মদ জামাল খান পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তি ঘোষণা করেন।
প্রাচীন মহাভারতে হুনজা উপত্যকার উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতের মহাজনপদে যুগের কিছু কিছু সময়ে এই অঞ্চলটি প্রাচীন ভারতীয় রাজ্যগুলির প্রধানত কাপিসা, গন্ধার রাজ্য এবং সম্ভবত মগধের অধীনে ছিল। ৭ম শতাব্দীর শেষদিকে বৌদ্ধধর্ম হুনজা উপত্যকায় প্রচারিত হয়েছিল। এখানে হুনজার স্যাক্রেড রক এর মতো বেশ কয়েকটি জীবিত বৌদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট আছে। যখন হুনজা উপত্যকা মধ্য এশিয়া উপমহাদেশে বাণিজ্য পথ হিসাবে কেন্দ্রীয় ছিল, তখন এটি উপমহাদেশে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী পরিব্রাজকদেরও আশ্রয় দিয়েছিল এবং এশিয়ার এই অঞ্চলে বৌদ্ধধর্মের প্রচারে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল।
The Sacred Rocks (Haldeikish) are situated between the Hunza River and the Karakorum Highwaym, close to the UNESCO enlisted village of Ganish, near the town of Karimabad in Hunza Valley. The rock is 180 metre in length and 9 metre at their highest point. These sacred Rocks of Hunza are one of the earliest sites of Petroglyphs along the ancient silk route.
Haldeikish with its thousands of petroglyphs in Bactrian, Sogdian, Kharosht, Tibetan, Chinese and Brahmi were written by the Silk Route travellers. These petroglyphs show the diverse cultural exchange that once passed through the Hunza region and help us to understand the history of this entire region from the first millennium CE. The boulders are sign posted from I to IV each with a brief description of its petroglyph engravings. The rocks were once able to be approached by well-worn stone steps and contained a series of Buddhist cave shelters but with this mountainous areas extreme weather and the ravages of time they have fallen with only a few being preserved.
হুনজা বহু শতাব্দী ধরে মীর শাসক পরিবার শাসিত একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল, যারা থুম উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। চীন ১৭৬১ সালে আধিপাত্যকারী হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। এ ছাড়াও একসময়ে হুঞ্জার শাসকরা নিজেদেরকে গ্রীক আলেকজান্ডারের বংশোদ্ভূত দাবি করেন। ১৮৪৭ সালে হুনজার মীর শাসক চীনের কাছে নামমাত্র আনুগত্য স্বীকার করে। সর্বশেষ সম্পূর্ণ স্বাধীন শাসক, মীর সাফদার খান ১৮৮৬ সাল থেকে শাসন করেন, পরে ব্রিটিশদের আক্রমণের পরে চীনে পালিয়ে যান।
উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ব্রিটিশরা “কাশ্মীরের উত্তর সীমান্তে ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের শাসকদের” সাথে রাশিয়ার জড়িত থাকার সন্দেহ করে। অন্যদিকে ১৮৮৮ সালে রাশিয়ান ক্যাপ্টেন ব্রোনিস্লাভ গ্রোম্বচেভস্কি হুনজা সফর করেন, এবং তার ঠিক পরেই ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন ফ্রান্সিস ইয়ংহসবন্ড রসকামে ব্রিটিশদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতে হুনজা সফর করেন। ইয়ংহসব্যান্ড শাসক সাফদার আলীর উদ্দেশ্যে বলেন “হৃদয়ের প্রতিবন্ধক এবং হুঞ্জার জনগণের মতো এতো সূক্ষ্ম একটি জাতি শাসন করার অযোগ্য।” ১৮৯১ সালে ব্রিটিশরা হুঞ্জা অভিযান চালিয়ে হুনজা এবং পার্শ্ববর্তী নগর রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। মীর, সাফদার খান চীনে পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং তার ছোট ভাই মীর মোহাম্মদ নাজিম খান ১৮৯২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশদের দ্বারা মীর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন। এরপর হুনজা ব্রিটিশ ভারতের সহায়ক জোটে একটি দেশীয় রাজ্যের স্বীকৃতি পায়, এটি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বহাল ছিল। কাশ্মীর বিরোধের জেরে ১৯৪৭ সালের ভারত পাকিস্তান কূটনীতিক অনিশ্চিয়তায় হুনজার মীর ভারতের বিপক্ষে অভ্যুত্থানের পর পাকিস্তান যোগদানে সম্মত হয়।
******
Fascinating story of Hunz tribesmen is known to few people in outside world.
আমি হুনজা ভ্যালি শুনেছি। এনাদের কথা খুব একটা শোনা যায় না।
খুব ভালো লাগলো এই লেখাটা। অনেক কিছুই জানা গেলো।
আর ছবিগুলিও সুন্দর হয়েছে।
বেশ ভালো হয়েছে লেখাটা। প্রচুর তথ্য সহকারে ধৈর্য ধরে এই লেখাটা অনেক পুরোনো ইতিহাস জানার সুযোগ করে দিয়েছে। এতো সুন্দর একটা জায়গা যদি আমাদের মানে ভারতের জম্মু কাশ্মীরের অন্তর্গত হতো তাহলে খুবই ভালো হতো। একবার অন্তত ওখানে যাবার চেষ্টা করতাম ওখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে কিন্তু দুর্ভাগ্য সেটা হয় নি।